ইউক্রেন আগ্রাসনের ষষ্ঠ দিনে রাজধানী কিয়েভ উপকণ্ঠে উপস্থিত রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। কী নেই সেই বহরে; ট্যাংক, সাঁজোয়া যান, আছে মাল্টিপল রকেট লঞ্চার সিস্টেম। প্রায় ৪০ মাইল দীর্ঘ বহরটি ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে রাজধানীর দিকে। এ খবরে ভয়ে তটস্থ কিয়েভের সাধারণ মানুষ। আসলে কি তারা তটস্থ?
ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা স্বিতলানা জালিশচুক কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে বলেন, রাশিয়ার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধে ইউক্রেনীয়রা একটু ভীত-সন্ত্রস্ত, কিন্তু তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
পশ্চিম ইউক্রেনের শহর বেরেগোভো থেকে তিনি আল-জাজিরাকে বলেন, ‘কোনোভাবেই পুতিন (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট) থামছেন না। তার সেনাবহর অগ্রসর হচ্ছে। তাদের অগ্রগতি থামাতে আমরাও প্রস্তুত। গঠিত হয়েছে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ইউনিট। সেখানে প্রায় এক লাখ নতুন সদস্য যোগ দিয়েছে। যদিও তারা সবাই বেসামরিক।
নিজ ভাইয়ের উদাহরণ টেনে জালিশচুক বলেন, তিনি একজন ব্যবসায়ী। সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু তিনি বন্দুক হাতে তুলে নিয়েছেন। রাজধানী কিয়েভের প্রবেশদ্বারের একটি শহর রক্ষা করতে গেছেন।
এদিকে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা সিএনএন-কে জানিয়েছেন, রাজধানী কিয়েভের কাছাকাছি অবস্থান করছে বিশাল রাশিয়ান কনভয়। তারা যেন থমকে গেছে। সেখানে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার কনভয়টি স্থবির হয়ে পড়েছিল। ইউক্রেন যোদ্ধাদের প্রতিরোধসহ বেশ কয়েকটি কারণের এমনটি হতে পারে। ‘হতে পারে, তাদের রশদে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। হতে পারে তারা পুনর্গঠিত হচ্ছে, অথবা তারা তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা বা পুনর্মূল্যায়ন করছে’— নাম প্রকাশ না করে বলেন ওই কর্মকর্তা।
অন্যদিকে, ‘আগ্রাসনকারী’ রাশিয়াকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থামানোর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি। মঙ্গলবার দুই নেতা টেলিফোনে ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনা করেন।
ক্ষমতায় আসার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণ দেবেন। তার ভাষণের ঠিক আগ মুহূর্তে দুই নেতার মধ্যে এ ফোনালাপ বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। হোয়াইট হাইজের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে রাশিয়ার জন্য বিশেষ বার্তা দিতে পারেন জো বাইডেন।
রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ‘নজিরবিহীন জোট’ গঠনের প্রস্তাব দিতে পারেন বাইডেন। সঙ্গে আরও বহুমাত্রিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ হতে পারে।