সাতক্ষীরার বকচরা আহমেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার রমজান আলীসহ চার জনকে কুপিয়ে ও ছুরকাঘাত করার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা প্রচেষ্ঠার মামলায় কিশোর গ্যাং লিডার রিপনসহ দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
মামলার ধার্য দিনে হাজির না হওয়ায় বুধবার (২৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরার চীফ জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক এসএম আশিকুর রহমান এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিকৃত আসামিরা হলো, মামলার ২ নং আসামি বাঁকাল এলাকার আব্দুল গফফারের ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার মো. রিপন (২৬) ও ৪ নং আসামি (রিপনের বাবা) মৃত আক্কাজ আলীর ছেলে আব্দুল গফফার (৫৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত বছরের ২৩ অক্টোবর কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ ও রিপনসহ তাদের বাহিনীর সদস্যরা রাম দা, লোহার রড, ছুরি, হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি সহকারে বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে শহরের বাঁকালস্থ রমজান আলীর বাড়িতে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এতে রমজান আলী প্রতিবাদ করলে আসামি আব্দুল গফফারের হুকুমে নাহিদ, রিপন, সিরাজুলসহ অন্যান্য আসামিরা তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে বোন সাজিদা খাতুন, ভাগ্নে ফাহিম সরদার ও রমজানের ছেলে ফারহান ফেরদৌস তাকে রক্ষা করতে আসলে উক্ত আসামিরা তাদেরও মারপিট ও গুরুতর জখম করে। এক পর্যায়ে আসামি নাহিদ হত্যার উদ্দেশ্যে তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে সজোরে রমজানের পেটের বাম পাশে পাজরের নিচে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। আহতরা সবাই ওই সময়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত রমজান আলীর মেঝ ভাই আব্দুর রহমান বাদী হয়ে পরদিন শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াসের ছেলে মো. নাহিদ (২৬), বাঁকাল এলাকার আব্দুল গফফারের ছেলে মো. রিপন (২৬), একই এলাকার মো. সাবদুল এর ছেলে মো. সিরাজুল ইসলাম (২৭), মৃত আক্কাজ আলীর ছেলে আব্দুল গফফার (৫৫), মো. মিজানের ছেলে মো. জিল্লু (৩০), আব্দুল গফফারের স্ত্রী শাহানারা খাতুন (৫০) ও তাদের কন্যা খুকু মনিকে (২৪) আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা প্রায় সবাই দীর্ঘদিন কোরাভোগের পর জামিনে মুক্ত ছিলেন। কিন্তু বুধবার মামলার ধার্য দিনে হাজির না হওয়ায় উক্ত দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে সাতক্ষীরার চীফ জুডশিয়াল আদালত।
এদিকে, কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও শহরের ইটাগাছা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মুজাহিদুর রহমান অন্তুকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে বাম হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে নেয়া ও একই এলাকার আব্দুস সবুরের মালিকানাধীন আলম এন্টার প্রাইজের ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
এ মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাড. এবিএম সেলিম আদালত কর্তৃক উক্ত দুই আসামির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে