সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস সুপার মো. বাবলুসহ চার কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে ভারত থেকে ফিরে আসা দুই পাসপোর্টধারী যাত্রীকে তিন ঘন্টা আটকে রেখে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগি পৌর শহরের বদ্দিপুর এলাকার মো. মতিয়ার রহমানের ছেলে মো. আব্দুস সবুর এই অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে তার নিটক আত্মীয় মোছাঃ ছাকিলা খাতুনকে নিয়ে বৈধ পাসপোর্টে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসেন। ইমিগ্রেশন শেষে ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস কার্যালয়ে গেলে সেখানে কর্মরত ব্যক্তিরা অন্যায়ভাবে তার (সবুর) ও আত্মীয়ের ব্যাগ, সমস্ত শরীর তল্লাশী করে অবৈধ কিছু না পেয়ে বিকাল ৫ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আটক করে রাখে।
আব্দুস সবুর আরো বলেন, কাস্টমস অফিসে অটকে রাখার সময় তারা তার পাসপোর্টের ছবি তুলে রাখে ও কাছে থাকা বাচ্চাদের খেলনা সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বের করে নিয়ে ৫ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ঘুষের টাকা না দেওয়ায় তার আত্মীয়কে নিয়ে তারা চলে যতেে বলেন। ফলে বাধ্য হয়ে তিনি বাড়িতে চলে যান। এঘটনার গত ১ অক্টোবর তিনি মালামাল ফেরত চেয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিগাল নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশ পেয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তার মোবাইলে রিং করে তাকে ভোমরায় যেতে বলেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কাস্টমস কর্তৃপক্ষের আহবানে গত ১৫ অক্টোবর বেলা ১২ টার দিকে তিনি ভোমরা স্থলবন্দর কাস্টমস কার্যালয় যান। এসময় তারা অন্যায়ভাবে তার পাসপোর্টের ছবি তোলে কেড়ে নেওয়া মালামালের মধ্য থেকে মাত্র দুটি কম্বল ফেরত দেয়। পরে তারা ভোমরা স্থল বন্দরের কাস্টমস অফিসের সামনে পাকা রাস্তার ধারে দাড়িয়ে তাকে হুমকি দেয় বলে, ভবিষ্যতে কিভাবে ভারতে যাস দেখে নিবো। পাসপোর্ট বাতিল করে ছাড়বো। সুকৌশলে মিথ্যে মামলায় জড়িত করবে বলে প্রকাশ করে। তিনি কেড়ে নেয়া মালামাল ফেরত ও ভবিষ্যতে কাস্টমস কর্মকর্তাদের মিথ্যে হয়রানি থেকে নিষ্কৃতি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে ভবিষ্যতে তার ও নিকট কোন আত্মীয় স্বজনদের যাতায়াতের পথে অবৈধ মালামাল দিয়ে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি বা ক্ষয়ক্ষতি করতে পারে এই আশঙ্কায় তিনি নিজে বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সাতক্ষীরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উল্লেখিত ঘটনার বিবরণ দিয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় ভোমরা স্থলবন্দরের কাস্টমস সুপার মো. বাবলু (৫০) সহ তার অধিনস্থ চার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ১৪ নভেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার জন্য আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারী করেছেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, কাস্টমস সিপাহী যথাক্রমে মো. হাসনাইনং (৩৫), মো. সুমন (৩২), আবুল কালাম (৪২), কাস্টমস ইন্সপেক্টর জেমি (৩৮) এবং ভোমরা গ্রামের মিয়ারাজ গাজীর ছেলে মো. জাকির হোসেন (৪৫)।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডঃ আব্দুস সামাদ বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।
খুলনা গেজেট/এএজে