যশোরের অভয়নগর উপজেলা ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকার সাত হেক্টর জমির ধানগাছে কারন্টে পোকা আক্রমণ করেছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সবুজ ধানগাছের মধ্যে লাল বা পোড়া বাদামি রঙের গাছ রয়েছে। পোকা দমনে কৃষকরা কীটনাশক স্প্রে করছে। পোকাটির আক্ষরিক নাম বাদামি গাছ ফড়িং। কৃষকের ভাষায় ‘ধানের কারেন্ট পোকা’। বিদ্যুতের মতো স্পর্শ করলেই সর্বনাশ, এমন ধারণা থেকেই পোকাটির নাম হয়েছে ‘কারেন্ট পোকা’। দেখতে প্রায় উকুনের মতো। ধানগাছের নিচের অংশে অবস্থান করে প্রথমে রস চুষে খায়। পরে ধানগাছ লাল বা পোড়া বাদামি রঙের হয়ে যায়। অবশেষে আক্রান্ত ধানগাছ মারা যায়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এবার অভয়নগর উপজেলা ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকার ৭ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র সাত হেক্টর জমির ধানগাছ ‘কারেন্ট পোকা’ আক্রামনের শিকার হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী বলেন, দুই বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। বর্তমানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে ধানের সর্বনাশ হয়েছে। ফলন ভালো হলেও পোকার আক্রমণের কারণে ২০ মণের যায়গায় ৫ থেকে ১০ মণ ধাণ হতে পারে।
পোকা আক্রমণের শিকার বিভিন্ন এলাকার কৃষক জানান, কারেন্ট পোকার আক্রম থেকে উত্তরণের জন্য কীটনাশক ছড়ানো হচ্ছে। তবে যে গাছে পোকা আক্রমণ করেছে, সেগুলো বাঁচানো যাচ্ছে না। যে কারণে এবার ধানের উৎপাদন কম হবে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক লিফলেট ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কেনো কাজ হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি প্রণোদনার আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, কৃষকরা না শুনে না বুঝে গাছের উপরের অংশে স্প্রে করছেন। অথচ এই পোকা গাছের নিচের অংশে অবস্থান করে। বিলি করে আক্রান্ত ধানগাছের নিচের অংশে কীটনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হলেও তারা তা করছেন না। কারেন্ট পোকা থেকে ধানগাছ বাঁচাতে ইতোমধ্যে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করাসহ বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাদের ৮০ শতাংশ ধান পেকে গেছে তাদের ধান দ্রুত কেটে ফেলতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে প্রণোদনার আওতায় অন্তর্ভূক্ত করণের প্রক্রিয়া চলছে।
খুলনা গেজেট/কেডি