নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে পরনের চাদর ছিঁড়ে গলায় ফাঁস দিয়ে এক হাজতি আত্মহত্যা করেছেন। মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে কারাগারে গেটের গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন তিনি।
হাজতি তুষার বন্দর উপজেলার সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যা মামলার আসামি। সাংবাদিক ইলিয়াস হত্যার দায় স্বীকার করে তিনি আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হাজতি তুষার গ্রেপ্তারের পর ২০২০ সাল থেকে কারাগারে ছিলেন। মামলাটির বিচার কার্যক্রমও প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে। রায়ের সময় ঘনিয়ে আসায় কিছুদিন ধরে তুষার কারাগারে নিয়মিত নামাজ পড়া শুরু করেন। তাহাজ্জুদ নামাজও পড়তেন তিনি। সবার কাছে দোয়াও চাইতেন।
জেল সুপার বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর থেকে তুষার অনুশোচনায় ভুগছিলেন। তিনি ধরে নিয়েছিলেন খুব দ্রুত মামলাটির রায় হয়ে যাবে এবং তার সাজা হবে। তাই ধারণা করা হচ্ছে, হাজতি তুষার আগে থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় লকআপ বন্ধ করার আগ মুহূর্তে তিনি সবার সঙ্গে মিশে গিয়ে অন্য একটি ভবনে ঢুকে পড়েন।
পরে পরনের চাদর ছিঁড়ে বারান্দার গেটের গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন তিনি। এ সময় অন্য কয়েদিরা ও কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাটি দেখে তাকে দ্রুত নামিয়ে শহরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তুষার মারা যান। জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন আরও বলেন, তুষারের আত্মহত্যার খবর তার পরিবারকে জানানো হয়। পরে তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালে মাদক বিক্রিতে বাধা দেয়ায় শামীম নামে এক যুবকের সঙ্গে তুষারের ঝগড়া হয়। সে সময় তুষার লাঠি দিয়ে শামীমের মাথায় আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় শামীম তুষারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে স্থানীয় সাংবাদিক ইলিয়াস উসকানি দিয়েছিলেন বলে ধারণা করেন তুষার। এছাড়াও এলাকায় অবৈধ গ্যাস লাইনের সংযোগ দেয়ার টাকা নিয়ে তুষার, ইলিয়াস, মাসুদসহ আরও কয়েকজনের মধ্যে বিরোধ ছিল। এসব ঘটনার জেরেই সাংবাদিক ইলিয়াসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাংবাদিক ইলিয়াসের স্ত্রী বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখ করে বন্দর থানায় হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয় তুষারকে।
খুলনা গেজেট/ টিএ