খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রীতি ম্যাচ : মালদ্বীপকে ২-১ গোলে হারাল বাংলাদেশ, সিরিজ শেষ হলো ১-১ সামতায়
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯৪
  আগামীর বাংলাদেশ হবে ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতার : ড. ইউনূস
  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ

কাবুল বিস্ফোরণে ১২ মার্কিন সেনাসহ নিহত ৬০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে ১২ মার্কিন সেনাসহ অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। মার্কিন মেরিন সেনা ছাড়াও এতে বেশ কয়েকজন মার্কিন নাগরিক ও আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি। খবর ওয়াল ট্রিট জার্নাল ও সিএনএনের।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, এই হামলায় তাদের ১২ জন সেনা নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ১১ জন মেরিন সেনা। একজন নৌ ডাক্তার। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। মার্কিন মুখপাত্র জন কিরবি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি এ হামলাকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন।

তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই হামলায় নিহতের সংখ্যা ২০। এ বিষয়ে তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ এএফপিকে বলেছেন, এই হামলায় এ পর্যন্ত ১৩ থেকে ২০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৫২ জন।

এদিকে কাবুল হাসাপাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নিহতের সংখ্যা ৬০। আর আহতের সংখ্যা ১৪০।

জন কিরবি বলেন, গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো বিমাবন্দরে আত্মঘাতী হামলার আশঙ্কা রয়েছে জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এ হামলার ঘটনা ঘটে।

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ‘আত্মঘাতী’ হামলার স্থানে ‘লাশের স্তূপ’ দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন বিবিসির সাংবাদিক সেকান্দার কেরমানি। তিনি বলেন, ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিওতে লাশের স্তূপ দেখা গেছে। তাই ওই বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে ‘আত্মঘাতী’ হামলায় শিশু ও বিদেশি নাগরিকসহ ৬৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। এই বিস্ফোরণে তালেবানের কয়েকজন নিরাপত্তা রক্ষী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

শীর্ষস্থানীয় এক আফগান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ৬০ জন আফগান নাগরিক নিহত হয়েছেন। তবে গার্ডিয়ান, রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ওই বিস্ফোরণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।

বিমানবন্দরের অ্যাবি গেট যেখানে মার্কিন এবং ব্রিটিশ সৈন্যরা অবস্থান নিয়ে হাজার হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল তার ঠিক বাইরে এই বিস্ফোরণ ঘটে।

নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে বলে তালেবানের একজন কর্মকর্তা বলছেন। পেন্টাগন নিশ্চিত করেছে বিস্ফোরণে “বেশ কয়েকজন” মার্কিন সেনা নিহত হয়েছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র বলছেন, নিহতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকসহ বেশ কিছু বেসামরিক মানুষ রয়েছেন। ”কাছেই এক নালায় লাশ, মাংসপিণ্ড এবং মানুষকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছে,”প্রথম বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মিলাদ নামে এক ব্যক্তি এএফপি বার্তা সংস্থাকে বলেছেন। ”বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর সেখানে পুরো ত্রাস ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। গেইট থেকে জনতাকে সরাতে তালেবান আকাশে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে,” জানান দ্বিতীয় একজন প্রত্যক্ষদর্শী।

”আমি আহত বাচ্চাকে হাতে নিয়ে এক ব্যক্তিকে ছুটতে দেখেছি।” ওই প্রত্যক্ষদর্শী (যার নাম প্রকাশ করা হল না) জানান, স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে তার বিমানে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তির মধ্যে তিনি সব কাগজপত্র ফেলে দেন।

”আমি বিমানবন্দরে আর যাব না। আমেরিকা মুর্দাবাদ, দেশত্যাগ আর ভিসা নিপাত যাক্,” তিনি এএফপিকে বলেন। একটি ‘জটিল হামলা’র জেরে এসব প্রাণহানি ঘটেছে বলে বলছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র। এখন পর্যন্ত কেউ এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি।

কাবুল থেকে বিবিসি সংবাদদাতা সেকান্দার কিরমানি খবর দিচ্ছেন, বিস্ফোরণের পর যেসব ভিডিও এবং ছবি প্রকাশিত হয়েছে তাতে লাশের ওপর লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলে তিনি মনে করছেন। অকুস্থল থেকে বহু আহত ব্যক্তিদের সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী এক সাংবাদিককে জানিয়েছেন, যে বোমাটি ফেটেছে তা ছিল ”খুবই শক্তিশালী”।

রয়টার্স বার্তা সংস্থা একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে তাতে এই ব্যক্তি বলছেন, বিস্ফোরণের সময় সেখানে অন্তত চারশো থেকে পাঁচশো লোক উপস্থিত ছিল। নিহতদের মধ্যে ”বিদেশি সৈন্য” রয়েছে বলে তিনি জানান। “আমরা স্ট্রেচারে করে আহতদের সরিয়ে নেই…রক্তে আমার পোশাক ভিজে গিয়েছিল।”

বিবিসি সংবাদদাতা জনাথান বিইল জানাচ্ছেন, প্রথম হামলার পর দ্বিতীয় আরেকটি বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই বিস্ফোরণ সম্পর্কে জানানো হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর দিচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট যখন আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে তার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন তখন তাকে কাবুল বিমানবন্দরের এই হামলা সম্পর্কে খবর দেয়া হয়। এই ঘটনার পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সাথে জরুরি বৈঠক করছেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!