২০০২ সালের ৩০ আগষ্ট সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলার সাক্ষী গ্রহণ শুরু হচ্ছে আগামি ১৬ জুন।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল ওই দিন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুজিবুর রহমান, কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও সাবেক আহবায়ক সাজেদুর রহমান চৌধুরীর সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন।
সাতক্ষীরা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পিপি এড. আব্দুল লতিফ জানান, বুধবার (১ জুন) হাইকোর্টের আদেশ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার (২ জুন) উভয়পক্ষকে মামলার বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞাত করা হয়েছে। বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনের ধারার আলোচিত এই মামলাটি সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল আদালত-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মন্ডল আগামী ১৬ জুন স্বাক্ষীর জন্য দিন ধার্য করেছেন। মামলার সাক্ষী গ্রহণের ধার্যদিনে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে তিন জন স্বাক্ষী উপস্থাপন করা হবে।
রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. ফাহিমুল হক কিসলু জানান, গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি টিআর-১৫১/১৫ মামলায় বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার থেকে ১০ বছর মেয়াদে কারাদন্ড হলেও রায় এর কয়েকদিন আগে মারা যান মামলার বাদি মুক্তিযুদ্ধচলাকালিন কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন ও অন্যতম সাক্ষী জেলা আওয়ামী লীগের বারবার নির্বাচিত সভাপতি ও সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহম্মেদ।
অস্ত্র ও বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনের দু’টি মামলায় প্রকৌশলী শেষ মুজিবুর রহমান, ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন ও সাজিদুর রহমান চৌধুরী আগামি ১৬ জুন আদালতে সাক্ষী দেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ।
উল্লেখ্য, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় এসটিসি ২০৭/১৫ ও ২০৮/১৫ (অস্ত্র ও বোমা) মামলা দু’টি ২০১৭ সালে বিচারিক আদালতে চলমান অবস্থায় হাইকোর্টে স্থগিত করেন আসামি পক্ষ। এরপর আসামি পক্ষ এবং রাষ্ট্রপক্ষ পূর্ণ শুনানী শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ কামরুল হোসাইন মোল্যার বেঞ্চ শুনানী শেষে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর উক্ত আদেশ ভ্যাকেট করেন। একই সাথে তিন মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে নথি প্রেরণপূর্বক যথা সময়ে বিচার কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু করোনাকালিন সময়ে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রায় প্রস্তুুতিতে দেরি হওয়া আদেশ আসতে অনেক সময়ক্ষেপণ হয়।
প্রসঙ্গত: বিগত ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালিন বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন কলারোয়ার একজন মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিতা স্ত্রীকে দেখতে। সেখান থেকে যশোরে ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে পৌছালে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটের সময় শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মী এবং সন্ত্রাসীরা হামলা ভাংচুর মারপিট বোমা বিস্ফোরণ ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়েন। এতে শেখ হাসিনার সফরসঙ্গীসহ দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এঘটনার এক যুগ পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা হয়।