সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলায় আরো একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। রবিবার (২০ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া তিনজন পূনরায় সাক্ষী দিয়েছেন । এ নিয়ে এ পর্যন্ত এই মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করলেন আদালত।
মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য্য দিনে সাংবাদিক ইয়ারব হোসেন তার সাক্ষ্য প্রদান করেন। এ ছাড়া কলারোয়ার আওয়ামী লীগ নেতা সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী, আমিনুল ইসলাম লাল্টু, মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী পূণরায় স্বাক্ষী দিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথীকে কাঠগোড়ায় আহবান করেও তাকে জেরা করেননি আসামীপক্ষ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল এসএম মুনীর, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জী, ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শেখ সিরাজুল ইসলাম সিরাজ ও সহকারি এটর্নি জেনারেল শাহীন মৃধা ও সাতক্ষীরা জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফ।
এদিকে আসামীপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার মাহাবুবউদ্দিন খোকন, অ্যাড.শাহানারা আক্তার বকুল, অ্যাড. আব্দুল মজিদ(২), অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী ও মিজানুর রহমান পিন্টু।
প্রসঙ্গত: ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষিতা এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে আসেন। হাসপাতাল থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে গাড়ি বহরে হামলার অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে উপজেলা যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ পূর্বক অজ্ঞাত ৭০/৭৫ জনের নামে থানায় ব্যর্থ হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে এক যুগ পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরপর ২০১৫ সালের ১৭ মে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাতক্ষীরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জনকে স্বাক্ষী করে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শেখ সফিকুল ইসলাম।
সাতক্ষীরা চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণের পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর আসামীপক্ষের আপীল আবেদনে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের আদেশ দেন উচ্চতর আদালত। এরপর রাস্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটি বিচারিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন