যথাযথ মর্যাদায় বৃহস্পতিবার কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গে পালিত হল মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মদিন ও কবির দ্বিশত জন্মবার্ষিকী। এদিন কলকাতার বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কলকাতার মল্লিকবাজারে অবস্হিত খ্রিস্টান কবরস্হানে মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমাধি ও মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধান দাবি, কলকাতার লালবাজার, খিদিরপুর ও বেনিয়াপুকুর এলাকায় যেসব বাড়িতে কবি বসবাস করেছেন তার অমর সৃষ্টি স্মৃতি বিজড়িত সেই বাড়িগুলিকে সংস্কার করে সেগুলিকে হেরিটেজ এলাকা হিসাবে ঘোষণা করতে হবে। উনিশ শতকে রাজা রামমোহন রায় যে নবজাগরণ ও প্রগতিশীল-বিভেদহীন সমাজ গঠনের বীজ বপন করেছিলেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত তার অমর কবিতা ও সাহিত্যে তাকে প্রসারিত করেছিলেন।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ছিলেন নবজাগরণের কবি, সম্প্রীতির কবি। আজকের ভারতে একটা ফ্যাসিস্ট সাম্প্রদায়িক দল যেভাবে আমাদের ভারতের বহুত্ববাদী সংস্কৃতিকে ভেঙে তছনছ করছে, সেক্ষেত্রে মাইকেল মধুসূদন দত্ত আজো প্রাসঙ্গিক। তাই মাইকেল দত্তের বাংলা ও ইংরেজী রচনাবলী সরকারি উদ্যোগে একত্রে বের করে তা পাঠ্যসূচীতে এনে বেশি করে ছাত্র-ছাত্রী ও নবপ্রজন্মের কাছে জানাতে হবে। কলকাতায় মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে একটা রাস্তা তৈরি করতে হবে।
এদিন মাইকেল মধুসূদন দত্তের কবর ও মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের রাজ্য সম্পাদক অধ্যাপক রজত বন্দ্যোপাধ্যায়, মধুমেলা কমিটির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক অধীর কুমার, বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের আন্তর্জাতিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম (বাংলাদেশ) ও চন্দনা সেন (বাংলাদেশ), সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ শাখার পক্ষে শম্পা বটব্যাল, অমিতাভ মুখোপাধ্যায় ও কাকলী দাস, ছায়ানটের পক্ষে সমরিতা মল্লিক ও সুরূপা মল্লিক, সপ্তাহ পত্রিকার সম্পাদক দিলীপ চক্রবর্তী, ডিভাইন সোসাইটির পক্ষে প্রতিভা বিশ্বাস, শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী বুদ্ধিজীবীর পক্ষে প্রাক্তন সাংসদ তরুণ মণ্ডল, সব্যসাচী চক্রবর্তী ও অম্বিকা চক্রবর্তী।
এদিন বক্তারা বলেন, কবির দীর্ঘ জীবন কেটেছে কলকাতায়। কলকাতার ৬ নম্বর লালবাজার স্ট্রিটে কবি লিখেছেন তার অমর কাব্য “মেঘনাদবধ”। সরকারি উদ্যোগে এটিকে অধিগ্রহণ করে একটা নামফলক বসানো হোক। খিদিরপুরে ২০ নম্বর কার্লমার্স সরণী ও ২২ নম্বর বেনিয়াপুকুর রোডে কবি বসবাস করেন। তাই সরকারি উদ্যোগে তার স্মৃতিবিজড়িত স্হানগুলি হেরিটেজ এলাকা ঘোষণা করে নামফলক বসিয়ে দিতে হবে। তবেই কবিকে প্রকৃত সম্মান জানানো হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম