করোনা বিধি না মেনে মোটরসাইকেল মিছিল করায় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো, তার ছেলে এদোয়ার্দো বলসানারো এবং ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অবকাঠামো মন্ত্রী টারকিসিও গোমেসকে জরিমানা করেছে দেশটির সাও পাওলো প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার।
শনিবার সাও পাওলো প্রদেশের গভর্নরের দফতর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি আদেশ অমাণ্য করে মোটরসাইকেল মিছিল, সামাজিক দূরত্ববিধি না মানা ও মাস্ক না পরার অভিযোগে এই তিনজনকে ১০৮ ডলার করে জরিমানা করেছে সাও পাওলো প্রাদেশিক সরকার।
আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা আছে ব্রাজিলে। সেই নির্বাচনের প্রচারের অংশ হিসেবে সাও পাওলো প্রদেশে সম্প্রতি বিশাল এক মোটরসাইকেল মিছিলের আয়োজন করে জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা।
জাইর ও তার ছেলে এদোয়ার্দো মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু দু’জনেই কেউই মাস্ক পরেননি সেদিনের মিছিলে। মিছিলে উপস্থিত ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী-কর্মকর্তা ও বলসোনারো সমর্থকদের অধিকাংশের মুখেও সেদিন মাস্ক দেখা যায়নি।
এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন সাও পাওলোর গভর্নর জোওয়াও ডোরিয়া, যিনি ব্রাজিলের জাতীয় রাজনীতিতে বলসোনারোর প্রধান বিরোধী হিসেবে পরিচিত। ডোরিয়া বলেছিলেন, ‘দায়িত্বহীন’ এই আচরণের জন্য শাস্তি পেতে হবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টকে।
তারপরই শনিবার জাইর বলসোনারোসহ তিনজনকে জরিমানা করার বিবৃতি দিল সাও পাওলো প্রাদেশিক সরকার।
ব্রাজিলের কট্টর ডানপন্থি নেতা হিসেবে পরিচিত জাইর বলসোনারো বরাবরই দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন, সামাজিক বিধিনিষেধ আরোপের বিরোধী। তার মতে, এ ধরণের বিধিনিষেধে মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তো নয়ই, উল্টো দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেখানে করোনা টিকার দুই ডোজ নেওয়ার পরও নিয়মিত মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে, সেখানে এই পরামর্শের ঘোর বিরোধী অবস্থানে আছেন জাইর।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘যারা বলে টিকা নেওয়ার পরও মাস্ক পরতে হবে, তারা বিজ্ঞানে বিশ্বাস করে না। করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করেছেন— এমন ব্যাক্তিদের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ানো একেবারেই অসম্ভব।’
বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এ রোগে আক্রান্তের হিসেবে তৃতীয় ও মৃত্যুর হিসেবে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে আছে ব্রাজিল। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান বলছে, এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ কোটি ৭৩ লাখ ৭৪ হাজার ৮১৮ জন এবং এ রোগে সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৭২ জনে।