করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। মৃত্যুর পর নিয়ম মেনে তার সৎকারও করে পরিবারের লোকজন। এরপর শোক-তাপ করেই দিন কাটছিল স্বজনদের। তবে তাদের শোককে মিথ্যা করে দিয়ে ১৮ দিন পর বাড়ি ফিরে আসেন সেই বৃদ্ধা। তবে ওই বৃদ্ধা মারা যাননি। গোটা ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছিল ভুল বোঝাবুঝির। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১২ মে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার সরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন জাগগাইয়াপেট গ্রামের বাসিন্দা গিরিজাম্মা। স্বামী মুথিয়ালা গাড্ডায়া রোজই স্ত্রীকে দেখতে হাসপাতালে যেতেন। কিন্তু গত ১৫ মে হাসপাতালে গিয়ে তিনি দেখেন, তার স্ত্রী কোভিড ওয়ার্ডে নেই। আশপাশের ওয়ার্ডে খুঁজেও মেলেনি সন্ধান। খোঁজ করতেই নার্সরা জানিয়ে দেন, ‘নিশ্চিত ভাবেই’ মারা গেছেন গিরিজাম্মা।
এরপর হাসপাতালের মর্গ থেকে একটি প্লাস্টিকে বাঁধা মৃতদেহও তুলে দেওয়া হয় স্বামী মুথিয়ালার হাতে। শোককাতর স্বামী গ্রামে ফিরে গিয়ে সেই মৃতদেহেরই সৎকার করেন। এদিকে ২৩ মে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার ৩৫ বছরের ছেলেও। গত ১ জুন ছিল দু’জনেরই শ্রাদ্ধ তথা শোকসভার অনুষ্ঠান। সেখানেই ফিরে আসেন গিরিজাম্মা। তাকে দেখে বিস্মিত হয়ে যান গ্রামবাসীরা।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গিরিজাম্মা সুস্থ হয়ে ওঠার পরও যখন বাড়ির লোক নিতে আসেনি তখন হাসপাতালের পক্ষ থেকেই বাড়ি ফেরার জন্য তাকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। গিরিজাম্মা ফিরে আসার পরই সকলে বুঝতে পারেন ভুলটা।
আসলে করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ বলে কেউ আর প্লাস্টিকের মোড়ক খুলে দেখেননি ভেতরে থাকা মৃতদেহটি গিরিজাম্মার কি না। ফলে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয় সেখানেই। অবশেষে সব ভুলের অবসান হয়েছে। ভুল বুঝতে পেরেছেন তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা।
ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি, কেরালায়। তার পর থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৮৪ লাখ ৪১ হাজার ৯৮৬ জন এবং এ রোগে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মারা গেছেন মোট ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮৯ জন।
খুলনা গেজেট/ টি আই