খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জুলাই-আগস্টে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশে সময় লাগবে : উপদেষ্টা আসিফ
  সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম মারা গেছেন
  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

করোনায় দৈনিক মৃত্যুতে বাংলাদেশ চতুর্থ

গেজেট ডেস্ক

করোনাভাইরাসে দৈনিক মৃত্যুসংখ্যায় বিশ্বে বাংলাদেশ এখন চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। তালিকায় শীর্ষস্থানে আছে ইন্দোনেশিয়া, দ্বিতীয় স্থানে রাশিয়া এবং তৃতীয় স্থানে ভারত।

সোমবার (১২ জুলাই) রাতে ওয়ার্ল্ডোমিটারস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখে এ ওয়েবসাইট।

ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে তালিকায় শীর্ষে থাকা ইন্দোনেশিয়ায় প্রতিদিন ৮৯০ এরও বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। নতুন করে দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছেন ৪০ হাজার ৪২৭ জন। সবমিলিয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় ৬৭ হাজার ৩৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছেন ২৫ লাখ ৬৭ হাজার ৬৩০ জন।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাশিয়ায় দৈনিক নতুন মৃত্যুর সংখ্যা ৭১০। দৈনিক নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ১৪০। সবমিলিয়ে রাশিয়ায় এ পর্যন্ত ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট শনাক্তের সংখ্যা ৫৮ লাখ ৮ হাজার ৪৭৩।

দৈনিক ৪৭৫ জনের নতুন মৃত্যু নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৯ হাজার ২৬৭ জনের। এছাড়াও দেশটিতে দৈনিক নতুন শনাক্ত হয়েছেন ২৫ হাজার ৯৯৭ জন। মোট শনাক্তের সংখ্যা ৩ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯০৪।

এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২০ জনের প্রাণহানি হয়েছে বাংলাদেশে। এতেই দেশটি চতুর্থ অবস্থানে উঠে এসেছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ হাজার ৬৩৯। এ সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ১৩ হাজার ৭৬৮ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯৫৭।

লকডাউন তুলে দিলে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার শঙ্কা

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের এ পরিস্থিতিতে বিদ্যমান লকডাউন তুলে দিলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড ইউনিভার্সিটির সিনিয়র রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট ও জনস্বাস্থ্যবিদ ড. খোন্দকার মেহেদী আকরাম।

তিনি বলেন, দৈনিক মৃত্যুহারের দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আজ চতুর্থ। আজ সর্বোচ্চ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যেই ১৫ তারিখ থেকে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের চিন্তাধারা এমন যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেরও ঈদ করার শখ আছে। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে মুক্ত করা হলো। ঈদের পর তাকে আবার লকডাউন দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করা হবে। অথচ দেশে আজ (১২ জুলাই) মারা গেলেন ২২০ জন। গতকাল মারা গেছেন ২৩০ জন। সংখ্যাগুলো আমাদের কাছে ছোট মনে হলেও দেশের মোট জনসংখ্যার তুলনায় অনেক বড়।

তিনি আরও বলেন, ভারতে যখন প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার জন মারা যাচ্ছিলেন, তখন আমরা বলেছিলাম, ‘ভারতে কি ভয়ংকর অবস্থা’! কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যা ভারতের চেয়ে সাড়ে আট গুণ কম। সেই হিসাবে বাংলাদেশের ২৩০ জনের মৃত্যু ভারতের প্রায় ২০০০ জন মৃত্যুর সমান। তাহলে কি বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ অবস্থা নয়? অবশ্যই ভয়াবহ অবস্থা। এর ভেতরে লকডাউন তুলে দিলে গোটা দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দেশে করোনা সংক্রমণের এ অবস্থায় আশঙ্কা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরও। শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা যেভাবে বাড়তে শুরু করেছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালে আইসিইউ শয্যাসহ কোনো সাধারণ শয্যাও খালি পাওয়া যাবে না বলে মনে করছেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন।

তিনি বলেন, গত মাসে সারাদেশে সংক্রমণের হার অনেক বেশি ছিল। জুন মাসে এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন। জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনে প্রায় এক লাখ রোগীকে সংক্রমিত হতে দেখেছি। আমরা যেভাবে সংক্রমিত হচ্ছি, হাসপাতালে রোগীর চাপ যদি বাড়তেই থাকে, আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাসপাতালের শয্যা আর খালি থাকবে না।

রোবেদ আমিন বলেন, কোভিড-১৯-এর যে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন আছে, তার মাধ্যমে মৃত্যু শুধু বয়স্ক মানুষের হচ্ছে না, তরুণদেরও হচ্ছে। বিভাগ অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে আমরা দেখেছি, সব জেলাতেই কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।

গত রোববার (১১ জুলাই) দেশে ২৩০ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে শনিবার ১৮৫ জনের, শুক্রবার ২১২ ও বৃহস্পতিবার ১৯৯ জনের মৃত্যু হয়। গত ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়ায়। এদিন মৃত্যু হয় ২০১ জনের।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!