কম টাকায় জমি বিক্রি না করায় মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়নুর রশিদ মুহিত এক ভ্যানচালককে বেদম মারপিট করে তার হাত ভেঙে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ওই জমির বর্তমান ক্রেতাকে আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জমি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার শাবলগাছা গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক আলিয়ার রহমানের ছয় শতাংশ জমি স্থানীয় নাকোল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুহিত ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকায় কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আলিয়ার অধিক দামে পাশেই মান্দারতলা গ্রামের ইয়াসিন শেখ এবং মাঝাইল গ্রামের রিজিয়া বেগমের কাছে বিক্রি করে দেন।
আট মাস আগে ওই জমি রেজিস্ট্রি করেও দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে জমির ক্রেতা ইয়াসিন শেখ মালিকানা বুঝে নিয়ে সেখানে নির্মাণকাজ শুরু করলে আওয়ামী লীগ নেতা মুহিত তাকে মারধর করেন। পরে জমির মালিক আলিয়ারের বাড়িতে গিয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে বেদমভাবে পিটিয়ে তার ডান হাত ভেঙে দেন।
এ ঘটনার পর ভ্যানচালক আলিয়ার ভয়ে হাসপাতালে না গিয়ে মাগুরা শহরের একটি ক্লিনিক গিয়ে চিকিৎসা করান। অন্যদিকে প্রাণভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন জমির ক্রেতা ইয়াসিন শেখ।
নির্যাতনের শিকার আলিয়ার রহমান বলেন, চেয়ারম্যান মুহিত কম টাকায় আমার জমি কিনতে চান। কিন্তু আমি গরিব মানুষ। টাকার দরকারেই বাড়ির জমি বিক্রি করেছি। এটাই আমার অপরাধ। মামলা করার সাহস নেই। আমি আল্লাহর কাছেই এর বিচার দিলাম।
জমির ক্রেতা ইয়াসিন শেখ জানান, আওয়ামী লীগ নেতা মুহিত ‘আমি দেশ চালাই, এলাকা আমার, আমার কথাতেই চলতে হবে’ এমন কথা বলে জমি ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।
ইয়াসিন বলেন, আমি ভাড়া করা দোকানে ব্যবসা করি। অনেক কষ্টে জমিটা কিনেছি। চেয়ারম্যান রিভলবার দেখিয়ে মারধর করেছে। আবার জমি ছেড়ে দিতে হুমকিও দিয়েছেন।
অভিযুক্ত শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হুমায়নুর রশিদ মুহিত মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি চেয়ারম্যান, আমার কি ভাই ব্রাদার নেই যে, নিজ হাতে মারতে যাব?
তিনি বলেন, আমার জমির সীমানার সঙ্গে ওই জমি। কিন্তু আমাকে না জানিয়ে তারা সেখানে বালু ফেলছে দেখে তাদেরকে বারণ করেছি মাত্র।
শ্রীপুর থানার ওসি সুকদেব রায় বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম