যশোরের চৌগাছায় ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ মেলায় আসা দর্শণার্থীদের বিড়ম্বনার শেষ নেই। কপোতাক্ষের ওপর কোনো সাঁকো না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে প্লাস্টিকের ড্রামে তৈরি ভাসমান সেতুতে পার হতে হচ্ছে। ফলে যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে দূর্ঘটনা। দ্রুত একটি সাঁকো চান এলাকাবাসী।
উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা গ্রামে প্রখ্যাত পীর বলুহ দেওয়ান (র.)-এর মাজার শরীফ ও বলুহ মেলার জন্য ব্যাপক পরিচিত। মাজার শরীফের পূর্বপাশ দিয়ে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। দেশ স্বাধীনের পর থেকে কপোতাক্ষ নদে খেয়াপারাপার হতো। এরপর সেখানে তৈরি হয় বাঁশের সাঁকো। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেটি নষ্ট হয়ে যায়। নদ খনন কাজের স্বার্থে সাঁকোটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলা হয়। বর্তমানে নদ খনন শেষ হয়েছে, নদে যথেষ্ট পানিও বেড়েছে, এই অবস্থায় সেখানে কোনো সাঁকো না থাকায় চরম ভোগান্তি বেড়েছে। স্থানীয়রা প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে ভাসমান একটি সাঁকো তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদ পারাপার হচ্ছেন।
সব বয়সের মানুষ সম্পূর্ণ অনিরাপদ এই সাঁকোয় উঠে নদ পার হচ্ছেন। এসময় কথা হয় তালপট্টি গ্রামের মেহেদী হাসানের সাথে। তিনি বলেন, সাঁকো না থাকায় সমস্যায় পড়েছি আমরা। কালিগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের আশানুর রহমান বলেন, প্রতি বছরই মেলাতে আসি। নদ পার হলে পথ কম হয় সেজন্য এই রাস্তায় আসা। কিন্তু এখন দেখি সাঁকো নেই ঝুঁকি নিয়ে পার হয়ে এলাম।
তেঘরি গ্রামের আব্দুল মালেক বলেন, চৌগাছা উপজেলা হয়ে মেলায় আসতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়, তাই নদ পার হয়ে মেলায় এসেছি কিন্তু ভাসমান সাঁকো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। হাজরাখানা গ্রামের ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, নদে একটি স্থায়ী সাঁকোর দরকার, কিন্তু হচ্ছে না। সাঁকো না থাকায় নদ পাড়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে গেছে।
বলুহর মাজার শরীফের খাদেম জয়নাল শাহ বলেন, সাঁকো না থাকায় দূর দূরান্তের মানুষ বিশেষ করে দর্শণার্থী ও ভক্তদের অনেক কষ্টে নদ পার হতে হচ্ছে। সরকারি ভাবে একটি সাঁকো হলে সকলেই উপকৃত হবে।
বলুহ মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, মেলায় আগতদের জন্য শুধু না, নদ পাড়ের বাসিন্দাদের জন্য নদে একটি সাঁকো খুবই প্রয়োজন। সাঁকো না থাকায় কৃষি, শিক্ষা, ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছুতেই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
হাজরাখানা গ্রামের বাসিন্দা ও নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিনুর রহমান শাহিন বলেন, নদে একটি সাঁকো তৈরির ব্যাপারে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি উপজেলা পরিষদের সভায় আলোচনা করে কিভাবে এই সমস্যা সমাধান করা যায় সে ব্যাপারে কথা বলবো।
খুলনা গেজেট/ টিএ