খুলনার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে আইন অমান্য করে ওভারলোড নিয়ে বালুসহ ভারি পণ্য বহন করছে ১০ চাকার ডাম্প ট্রাক। এসব ভারী যানের চাকার আঘাতে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থান দেবে যাচ্ছে। ফাটল দেখা দিয়েছে সড়কে।
খুলনা সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আঠারো মাইল-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়কে ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ ১৫ টন। এর অধিক ওজনের যানবাহন চলাচল বন্ধে সড়কের প্রবেশ মুখ আাঠারো মাইলে বড় সাইনবোর্ড লাগিয়েছে সওজ। কিন্তু সেটা মানা হচ্ছে না।
বালুমহাল থেকে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ওজনের ৪০ থেকে ৫০ টন লোডের বালু বহনকারী গাড়িতে রাতের আধারে চলাচলের কারণে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও নেই কারো মাথা ব্যথা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বালু ব্যবসায়ী জানান, কুষ্টিয়া এবং সিলেট থেকে ছোট ট্রাকে পাথুরে বালু এনে পড়তা হয় না। সেকারণে বড় ১০ চাকার ট্রাকে বালু আনতে হয় রাতের আধারে।
পাইকগাছার বাইনতলায় ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনে-রাতে ওভার লোড করে মালামাল আনা-নেওয়ার কারণে ভিলেজ পাইকগাছার গ্রামীণ পিচের সড়কটি ইতিমধ্যে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছ। চলাচলে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা।
ভিলেজ পাইকগাছা গ্রামের আজিজুর রহমান বলেন, লস্কর, পারশেমারী ও পাইকগাছা গ্রামের হাজার হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। বাইনতলা ব্রিজের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে ভারি ১০ চাকার ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তাটি নষ্ট হয়ে গেছে। গরমে প্রচুর ধুলা ও বৃষ্টিতে কাঁদা হওয়ায় চলাচল করা কষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় সাংবাদিক ফসিয়ার রহমান জানান, অতি লোভী কিছু ব্যবসায়ী ভারী ট্রাকে ওভার লোড করে মালামাল আনা নেওয়ার কারণে সরকারের শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়ক গুলো নষ্ট হচ্ছে। ফলে কিছু ব্যবসায়ী লাভবান হলেও সড়ক নষ্ট হয়ে লাখো মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
পাইকগাছা নাগরিক কমিটির সভাপতি মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর জানান, পাইকগাছা-কয়রা সড়কে কোথাও ট্রাফিক পুলিশ ও চেক পোষ্ট না থাকায় ভারি যানবাহন অহরহ ঢুকে পড়ছে। সড়ক নষ্ট হচ্ছে। দেখার কেউ নেই। জনগণ যদি সচেতন হয়ে নিজের সড়ক দেখভাল করে তাহলে সড়ক টিকবে।
পাইকগাছা ঢাকা পরিবহন স্টান্ড কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান জানান, আমাদের এ সড়কে ওভার লোডের গাড়ি চলাচল করার কারণে রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। এখন বৃষ্টির সময় সড়কের পাশে পানি ভর্তি থাকায় সড়ক দেবে যাওয়ার সম্ভবনা বেশি।
খুলনা জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি অমরেশ কুমার মন্ডল জানান, আমরা ইতিমধ্যে সড়কে ওভার লোডের ট্রাক বন্ধে স্মারকলিপি দিয়েছি। আজও কোন পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। অহরহ ওভারলোডের গাড়ী চলছে। সড়ক নষ্টের জন্য ওভারলোডের গাড়ী গুলো বেশি দায়ী।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, ওভার লোডের ১০ চাকার ট্রাক চলাচল বন্ধে বাস মিনিবাস মালিক সমিতি ইতিমধ্যে সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বরারব স্মারকলিপি দিয়েছেন। তার অনুলিপি আমি পেয়েছি। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা হয়েছে। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম