আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ তিনজনের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধান চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুলতান মাহমুদ এ আবেদন করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি নিজেই বিষয়টি জানিয়েছেন।
আবেদনে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও তার দুই ভাই আব্দুল কাদের মির্জা ও মাহাদাত কাদের মির্জার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অনুসন্ধান করার কথা মামলার আরজি জানানো হয়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারদলীয় সাবেক এমপি-মন্ত্রী ও নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান।
বুধবার রাজধানীর ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ‘সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে সড়ক-মহাসড়কের ব্যাপক উন্নয়ন দাবি করা হলেও সড়ক খাতে ২৯ হাজার ২৩০ থেকে ৫০ হাজার ৮৩৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে ১২ বছরই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) দায়িত্বে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। দুর্নীতি-অনিয়মের বিরুদ্ধে নিয়মিত বচন দিলেও তাঁর সময়ে ঠিকাদারি কাজ ও বিল পেতে ঘুষ, কমিশন বাণিজ্য হয়েছে। নেতা, ঠিকাদার ও কর্মকর্তাদের আঁতাতে প্রকল্প ব্যয়ের ১০ থেকে ২০ শতাংশ গেছে। লাইসেন্স ভাড়া, কার্যাদেশ কেনাবেচা, স্থানীয় পর্যায়ে চাঁদাবাজিতে আরও ২ থেকে ৬ শতাংশ টাকার অনিয়ম হয়েছে। প্রকল্প ব্যয়ের ২৩ থেকে ৪০ শতাংশ দুর্নীতি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে এসেছে।
প্রতিবেদনে ২০০৯-১০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বাস্তবায়ন প্রকল্পের ব্যয় বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে সম্পন্ন ২৫টি প্রকল্প পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। গত ১৫ অর্থবছরে সওজে বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার ৮৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে নির্মাণকাজে। ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোট ব্যয়ের ৭২ শতাংশ কাজ পেয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম