খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ মাঘ, ১৪৩১ | ২৫ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  নগরীর শেখপাড়া তেতুলতলায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অর্নব কুমার সরকার গুলিতে নিহত

শুভ বাংলা নববর্ষ

 নিজস্ব প্রতিবেদক

কালের যাত্রাপথে শুরু হলো নতুন আরেকটি বাংলা বছরের। পঞ্জিকার পালাবদলে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ। শুভ বাংলা নববর্ষ ১৪৩০।

মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে যা ছিল খাজনা উপলক্ষ, তা এখন উদযাপনের উৎসব। এ নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে, উদযাপন করতে সমগ্র বাঙালি জাতি আজ এক কাতারে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে বাঙালির একমাত্র অসাম্প্রদায়িক উৎসবের দিন এটি। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের সহকর্মীদের জন্য চালু করেছে বিশেষ বৈশাখী ভাতা। সব মিলিয়ে এ এক প্রাণের উৎসব।

বিশিষ্টজনদের মতে, আমাদের এখানে ধর্ম নিরপেক্ষ আর কোনো জাতীয় উৎসব নেই। অসাম্প্রদায়িকতার দিক থেকে বিবেচনা করলে পহেলা বৈশাখ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতিগতভাবেও বৈশাখ গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে ফসলি মাস, অন্যদিকে কালবৈশাখী। সব মিলিয়ে বৈশাখ উদ্দীপনামূলক এক মাস, যা আমাদের জীবনে নতুন মাত্রা যোগ করে।

আবহমানকাল বাংলার গ্রামীণ জনপদে উদযাপিত হওয়া নববর্ষের আয়োজন এখন ছুঁয়েছে নগর জীবনে এবং নতুন মাত্রায়। সর্বত্র উদযাপিত হচ্ছে বাংলার উৎসব, উচ্চারিত হচ্ছে বাঙালিয়ানার জয়গান। কণ্ঠে কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে, ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য। ‘

প্রকৃতপক্ষে পহেলা বৈশাখ শুধু আমাদের একার উৎসব নয়। গোটা অঞ্চলেই বৈশাখ উদযাপিত হয়। সেই সঙ্গে পুরো অঞ্চলেই প্রকৃতির বদল হয়। আমরা নিজস্ব সংস্কৃতির কথা বলি, সেটার সঙ্গে প্রকৃতির সংলগ্নতা রয়েছে। এটাই আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান।

বর্তমানে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে মুখ্য হয়ে উঠেছে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, যা প্রবর্তনের কৃতিত্ব প্রায় পুরোটুকুই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। তিনি শান্তিনিকেতনে প্রথম ঋতুভিত্তিক উৎসবের আয়োজন করেন। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলার প্রান্ত থেকে শহরে ছড়িয়ে পড়ে বর্ষবরণের আয়োজন। ১৯৬১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রবীন্দ্রচর্চা নিষিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছিল, সেই চেষ্টা প্রতিরোধেরও অংশ হয়ে গিয়েছিল বর্ষবরণের আয়োজন।

গ্রামীণ জীবন থেকে শহুরে জীবনে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের ব্যাপকতা লাভ করে ১৯৬৭ সালে রমনা উদ্যানের অশ্বত্থমূলে ছায়ানটের প্রভাতি আয়োজনের মধ্য দিয়ে। এ পথচলা এত সহজ ছিল না। পাকিস্তান আমলে তো বটেই, স্বাধীন বাংলাদেশেও আক্রমণের শিকার হয়েছে এ উৎসব। ২০০১ সালে ধর্মীয় উগ্রবাদীদের বোমায় রক্তাক্ত হয়েছে। রমনায় বোমা হামলা করেও সংস্কৃতির অগ্রযাত্রা থামাতে পারেনি ধর্মীয় উগ্রবাদীরা। পরের বছর থেকে বিপুল উৎসাহে মানুষ বর্ষবরণের আয়োজনে যোগ দিয়ে আসছেন। এর সঙ্গে রয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রাও।

সেই বার্তা নিয়েই আজ দেশব্যাপী উদযাপিত হবে বাংলা নববর্ষ। কায়মনে বাঙালি প্রার্থনা করবে- ‘মুছে যাক গ্লানি ঘুচে যাক জরা/ অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা...। ‘

ঘরে ঘরে উচ্চারিত হবে, ‘ এসো হে বৈশাখ, এসো এসো…’

প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা : সব অন্ধকার ও বাধাবিপত্তি দূর করে আগামী বছরগুলোয় একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কামনা করে দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ (পয়লা বৈশাখ) উপলক্ষে সন্ধ্যায় দেশবাসীর উদ্দেশে এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বার্তায় এই শুভেচ্ছা জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই শুভ নববর্ষের প্রাক্কালে আমাদের প্রার্থনা এই যে আমরা যেন সব অন্ধকার ও বাধাবিপত্তি দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারি।’
তিনি বলেন, ‘নানা ধরনের বাধা ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে দেশ আরও একটি বছর পার করেছে।’ এ সময় দেশ-বিদেশে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শুভ নববর্ষ। সূত্র: বাসস

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!