রান্নার কাজে ব্যবহার হওয়া এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারে গ্যাসের নির্ধারিত পরিমাপে স্থানীয়ভাবে কারচুপির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। এ বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন।
রোববার (১৯ নভেম্বর) খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির নভেম্বর মাসের সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
খুলনা জেলা প্রশাসক বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসেবে অবৈধ মজুদ বিষয়েও তৎপরতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা, সরকারি সম্পদ ও জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবাইকে সজাগ থাকা প্রয়োজন।
সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সবিজুর রহমান সভায় জানান, জেলায় ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ কিছুটা কমেছে। তবে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালু রাখা প্রয়োজন। জেলার নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এবং চারটি উপজেলা হাসপাতালের ভিশন কর্ণারে চোখের চিকিৎসা ও চোখ পরীক্ষা করে চশমার পাওয়ার নির্ণয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশব্যাপী এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স সপ্তাহ চলছে। এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে চিকিৎসাক্ষেত্রে এর কার্যকারীতা নষ্ট হচ্ছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত এন্টিবায়োটিক ওষুধের বিক্রী বন্ধ করা প্রয়োজন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তানভীর আহমদ সভায় জানান, গতমাসে জেলা পুলিশের অধিক্ষেত্রে রুজুকৃত মামলা ছিলো একশত ৬৫টি। এসময়ে সড়ক-মহাসড়কে যানচলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষায় পিওএস যন্ত্রের মাধ্যমে তিনশত ২১টি মামলার মাধ্যমে প্রায় ১৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্রকরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার রুবাইয়াত সানজিদ হোসেন সভায় জানান, খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে দিনে ও রাতে পুলিশের টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত মাসে মেট্রোপলিটন অধিক্ষেত্রে একশত ৩৭টি মাদকের মামলা হয়েছে। ‘হ্যালো কেএমপি’ অ্যাপ ব্যবহার করে মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ বিষয়ক তথ্য পুলিশকে জানানোর সুযোগ রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জেলার নয়টি উপজেলার চারশত ৫৪ জন নারী খামারিকে ছাগল ও মুরগীর প্রাইম শেড নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছাগলের ১৪০টি শেড এবং মুরগীর জন্য ৩১৪টি শেড রয়েছে। এছাড়া ডেইরি উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে এক হাজার ছয়শত ১৯ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
বিভাগীয় পাসপোর্ট দপ্তরের উপপরিচালক ফাতেমা বেগম সভায় জানান, গতমাসে সংশ্লিষ্ট অফিসে সাত হাজার পাঁচশত ৬১টি ই-পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে এবং এসময়ে চার হাজার পাঁচশত তিনটি পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। গতমাসে ১১৫টি এমআরপি ভিসা প্রদান করা হয়েছে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার মন্ডল, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ সভায় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
খুলনা গেজেট/এমএম