জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র গড়ার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান জানিয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা তৈরি করা দরকার, যেখানে জবাবদিহিতা হবে প্রাথমিক ভিত্তি। কেননা জবাবদিহিতা না থাকলে কোনো অবস্থাতেই আপনি মানুষের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না।’
শুক্রবার সকালে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশে (কেআইবি) দুইদিন ব্যাপী জাতীয় সংলাপে সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (এফবিএস)-এর আয়োজনে ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন বিষয়ে এই জাতীয় সংলাপ শুরু হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘জবাবদিহির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো থাকবে। তার একটা হলো-সরকার কীভাবে গঠন করছেন। আরেকটি হলো সবার মধ্যে কীভাবে জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করছেন। কীভাবে নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে আইনসভা কিংবা বিচার বিভাগের সম্পর্ক নির্ধারণ করছেন। বিচার বিভাগ কীভাবে স্বাধীন আছে। আসলে নাগরিকের হয়ে নির্বাহী বিভাগকে প্রশ্ন করতে পারেন। এগুলো প্রাতিষ্ঠানিক দিক।’
তিনি বলেন, ‘আজকের পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক সংগ্রামের পর্যায়ে আমরা উপস্থিত হয়েছি। সেই সময় ঐক্যের বিষয়টা কিসের ভিত্তিতে, কিসের ঐক্য চাই আমরা। সেটা নির্ধারণ করা দরকার প্রথমেই। ঐক্যের জায়গা হলো এই-কেবলমাত্র অতীতে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বা ব্যক্তিতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে লড়াই, সেটা ঐক্যের সূচনা মাত্র।’
বর্তমানে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘এখন যে প্রশ্নে আমাদের ঐক্যের জায়গাটা তৈরি করা দরকার, সেটা হলো বর্তমান পরিস্থিতির পরও একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা যেটি আসলে জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে পারে। এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে ক্ষমতার এককেন্দ্রিককরণ ব্যবস্থা অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো সার্বিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। এই জায়গাগুলোতে যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, ঐক্যমত্যের জায়গাগুলো অগ্রসর করা দরকার’।
বক্তব্যের শুরুতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বীর শহীদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘বীর শহীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়ার নৈতিক অধিকার আমার নেই।’ এ সময় জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম