গত এক বছরে বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের উপরে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে দফায় দফায় এ মূল্যবৃদ্ধি করা হলেও সাধারণ ক্রেতারা দুষছেন ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার মানসিকতাকে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সয়াবিন ফলের চাষ মূলত: আমেরিকা ও ব্রাজিলে হয়। কিন্তু ওই দু’টি দেশে ২০১৯ সালের শেষ দিকে করোনা ভাইরাস হানা দেয়। তাছাড়া চীনের প্রয়োজনের অধিক তেল ক্রয় নীতির কারণে ২০২০ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশে হু হু করে বাড়তে থাকে নিত্য প্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দাম।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৯৪ টাকা। যা পরবর্তী মাসে বেড়ে ১০৪ টাকায় বিক্রি হয়। ডিসেম্বরে এসে তার মূল্য দাড়ায় ১০৭ টাকা। ২০২১’র জানুয়ারিতে দাম বৃদ্ধি পেয়ে ১১৬ টাকা হয়। যা বাড়তে বাড়তে সর্বশেষ ২০২২ সালের জানুয়ারিতে পৌঁছায় ১৫৪ টাকায়।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পাঁচ লিটারের সয়াবিন ৫২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৪০ টাকায়।
বড় বাজার পাইকারী তেলের ব্যবসায়ী রেজা এন্ড ব্রাদাসের মালিক মো: শাহ আলম সরদার জানান, গত এক বছরে খোলা তেলের দাম প্রতিকেজিতে ৬০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। বহিবিশ্বে তেলের দাম বৃদ্ধিতে তিনি এ দরে তেল বিক্রি করছেন।
একই বাজারের মেহেদী হাসান নামে অপর ব্যবসায়ী বলেন, সয়াবিন ফল মূলত: আমেরিকা ও ব্রাজিলে বেশী হয়। কিন্তু সেখানে করোনার প্রকোপ বেশী হওয়ার কারণে চাষ ব্যাহত হয়। তাছাড়া চীনের মাত্রাতিরিক্ত তেল ক্রয় করার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর প্রভাব পড়ে। যার কারণে বাংলাদেশসহ বহিবিশ্বে তেলের দাম বেড়ে যায়।
ব্যবসায়ী শাহীন আকন্দ জানান, আমাদের দেশে কোন ক্ষেত্রে কোন জবাবদিহিতা নেই। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়। সরকার যদি আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয় তাহলে প্রতিকেজি তেলের দাম আট টাকা করে কমানো যাবে। তাছাড়া তিনি ভ্যাট প্রত্যাহারের বিষয়ে সরকারের প্রতি অনুরোধ রাখেন।
খুলনা বড় বাজারে কথা হয় সয়াবিন তেল ক্রেতা রাহিলা বেগমের সাথে। ছয় সদস্যের পরিবার তার। সংসার চালাতে প্রতিমাসে পাঁচ লিটার তেলের প্রয়োজন হয়। স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। প্রতিমাসে তার তেল খরচ বাবদ ২১৫ টাকা বেশী খরচ হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার মানসিকতাকে দায়ী করেছেন তিনি।
তেলের দাম যেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাতে সেজন্য তিনি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই