খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট

একুশে পদক প্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগেরহাট

একুশে পদক প্রাপ্ত কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে রবিবার (০৬ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি দুই ছেলে, স্ত্রীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এর আগে কবির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের চিতলীতে অবস্থানকালে রবিবার সকালে হটাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তখন প্রথমে বাগেরহাট এবং পরে বরিশাল নেওয়া হয় কবিকে। বরিশালের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে বিভিন্ন পরীক্ষার পর কবির হার্টের সমস্যাসহ বেশি কিছু শারীরিক জটিতলা ধরা পড়লে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা নেওয়ার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় পরিবারের সদস্যরা কবিকে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রওনা হওয়ার পর পথেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজের ব্যাবস্থাপনা বিভাগের বিভাগিয় প্রধান কবির চাচাতো ভাই মো. শিবলী হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার মরদেহ বাগেরহাটের বৈটপুর চিতলি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হচ্ছে। মোহাম্মদ রফিক দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগসহ শরীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।সোমবার জানাজা শেষে পরিবারিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানিয়েছেন।

কবি মোহাম্মদ রফিক ১৯৪৩ সালের ২৩ অক্টোবর বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা ইউনিয়নের বৈটপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । বাবা সামছুদ্দীন আহমদ এবং মাতার নাম রেশাতুন নাহারের আট সন্তানের মধ্যে মোহাম্মদ রফিক সবার বড়। মোহাম্মদ রফিকের শৈশব কাটে বাগেরহাটে। মেট্রিক পাশ করে ঢাকার নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হন, কিন্তু পরে ঢাকা কলেজে মানবিক বিভাগে চলে যান।১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ. ডিগ্রি লাভ করেন মোহাম্মদ রফিক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হন। পাকিস্তানের সামরিক আদালত তাকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয়, কিন্তু এম. এ. পরীক্ষার জন্য তিনি ছাড়া পান। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে কাজ করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করার পর তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন। তিনি ২৯ জুন ২০০৯ পর্যন্ত দীর্ঘকাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ২০০৯ সালে অবসরের পর ঢাকায় থাকতেন। গেল সপ্তাহে তাঁর ছোট ছেলে শুদ্ধসত্ত্ব রফিকের সাথে গ্রামে বাড়ি আসেন তিনি।

২০১০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে। ১৯৭০ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখী পূর্ণিমা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ সালে প্রকাশ পায় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধুলার সংসারে এই মাটি’।

তার প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে ‘কপিলা’, ‘খোলা কবিতা, ‘গাওদিয়া’, ‘মানব পদাবলী’, ‘আত্নরক্ষার প্রতিবেদন’ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!