সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলসি গ্রামে স্বামী, স্ত্রী ও দুই শিশুসহ একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোন ক্লু উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তবে কি কারণে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এদিকে যে বাড়িতে এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে একতলা সেই বাড়িতে কিভাবে দুর্বৃত্তরা প্রবেশ করলো তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কারণ বাড়ির বারান্দার গ্রীলে তালা লাগানো অবস্থায় ছিল। তবে ছাদের সিঁড়ির দরজা খোলা ছিল। পুলিশ ধারণা করছে দুর্বৃত্তরা প্রথমে ছাদের উপর উঠে সিঁড়ি বেয়ে নীচের ঘরে চলে আসে এবং এই হত্যাকান্ড ঘটায়। হত্যার পর ওই সিঁড়ি বয়েই আবার তারা পালিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কি কারণে তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের একাধিক টিম মাঠে নেমেছে। প্রতিবেশি একজনের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
তিনি বলেন, বেলা একটার দিকে নিহত চার জনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে তাদের দাফনের জন্য লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকান্ডের বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র সনাক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা করা হয়নি। তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে নৃশংস এই হত্যাকান্ডের পর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনার অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম) এ কে এম নাহিদুল ইসলাম ও সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোররাতে কোন এক সময় দুর্বৃত্তরা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের খলিসা গ্রামের মৃত শাহাজান আলীর ছেলে হ্যাচারি মালিক শাহিনুর রহমানের ঘরে ঢুকে মোঃ শাহীনুর রহমান (৪০), তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩০), ৯ বছরের শিশু ছেলে সিয়াম হোসেন মাহী ও ৬ বছরের শিশু কন্যা তাসমিন সুলতানাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। মর্মান্তিক এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় তাদের চার মাসের শিশু কন্যা মারিয়া খাতুন। একই পরিবারের ৪ জনকে হত্যার ঘটনায় পরিবারের স্বজনদের মাঝে চলছে শোকের মাতম। গোটা উপজেলা ব্যাপী নেমে এসেছে শোকের ছায়া ।
খুলনা গেজেট/এনএম