খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
  ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক
  সচিবালয়ের আগুন সোয়া ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস

এইচএসসির খাতা পুনর্মূল্যায়নে রেকর্ড : যশোর বোর্ডে ৬৬ হাজার আবেদন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোর শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল চ্যালেঞ্জ করেছে মোট ৬৬ হাজার শিক্ষার্থী। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশি আবেদন পড়েছে ইংরেজি বিষয়ে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ গত ১৫ অক্টোবর যে ফলাফল ঘোষণা করেছে সেটি তারা মেনে নিতে পারেননি। এ কারণে উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার্থীরা এ চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। যশোরে শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এবারই সর্বোচ্চ সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বছর রেকর্ড সংখ্যক ৬৬ হাজার ৫৮টি আবেদন জমা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছেন বোর্ডের পরীক্ষা বিভাগ। সর্বোচ্চ আবেদন জমা পড়েছে ইংরেজির দুটি পত্রে। যশোর বোর্ড প্রতিষ্ঠার পর এবারই সবচেয়ে আবেদন জমা পড়লো।

পরীক্ষা বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এইচএসসির উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নে জন্য বাংলা প্রথম পত্রে পাঁচ হাজার ২৯৪টি আবেদন পড়েছে, দ্বিতীয় পত্রে পাঁচ হাজার ২৯৪টি, ইংরেজি প্রথম পত্রে ১৮ হাজার ৯৫১টি, দ্বিতীয় পত্রেও ১৮ হাজার ৯৫১টি, অর্থনীতি প্রথম পত্রে ৯২টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৯২টি, সমাজ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ৩০টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৩০টি, যুক্তিবিদ্যা প্রথম পত্রে ৮৯টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৮৯টি, মনোবিজ্ঞান প্রথম পত্রে পাঁচটি, দ্বিতীয় পত্রেও পাঁচটি, ভূগোল প্রথম পত্রে ৮৮টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৮৮টি, পরিসংখ্যান প্রথম পত্রে একটি, দ্বিতীয় পত্রেও একটি, আরবি প্রথম পত্রে একটি, দ্বিতীয় পত্রেও একটি, পদার্থ বিজ্ঞান প্রথম পত্রে তিন হাজার ৯৮৯টি, দ্বিতীয় পত্রে তিন হাজার ৯৮৯টি, রসায়ন প্রথম পত্রে ২১টি, দ্বিতীয় পত্রেও ২১টি, জীব বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ২০টি, দ্বিতীয় পত্রেও ২০টি, কৃষি শিক্ষা প্রথম পত্রে ২১টি, দ্বিতীয় পত্রেও ২১টি, ইসলাম শিক্ষা প্রথম পত্রে ১৯টি, দ্বিতীয় পত্রেও ১৯টি, হিসাব বিজ্ঞান প্রথম পত্রে ৬৪৭টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৬৪৭টি, উচ্চতর গণিত প্রথম পত্রে ৩৩টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৩৩টি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি প্রথম পত্রে ৫০টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৫০টি, পৌরনীতি ও সুশাসন প্রথম পত্রে ১০০টি, দ্বিতীয় পত্রেও ১০০টি, সমাজ কর্ম প্রথম পত্রে ৩০টি, দ্বিতীয় পত্রেও ৩০টি, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান প্রথম পত্রে সাতটি ও দ্বিতীয় পত্রেও সাতটি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে ছয় হাজার ৯৭৪টি, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা প্রথম পত্রে পাঁচটি ও দ্বিতীয় পত্রেও পাঁচটি, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও মার্কেটিং প্রথম পত্রে ১৩টি ও দ্বিতীয় পত্রেও ১৩টি, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং এবং ইন্স্যুরেন্স প্রথম পত্রে ১২টি ও দ্বিতীয় পত্রেও ১২টি, ইতিহাস প্রথম পত্রে ২৪টি ও দ্বিতীয় পত্রেও ২৪টি আবেদন জমা পড়েছে। দুটি বিষয় মিলে পাস হওয়ায় কারণে একইসাথে আবেদনকৃত বিষয়ের প্রথম পত্র ও দ্বিতীয়পত্রে শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছে।

চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সারাদেশের আটটি সাধারণ বোর্ডের মধ্যে যশোর বোর্ডের অবস্থান সপ্তম। অনেক নতুন শিক্ষাবোর্ড যশোরকে পেছনে ফেলে উপরে উঠে গেছে।

এ বছর এইচএসসি, আলিম ও সমমানের পরীক্ষায় মাদরাসা বোর্ডে গড় পাসের হার ৯৩.৪০, কারিগরি বোর্ডে ৮৮.৯, সিলেট শিক্ষাবোর্ডে ৮৫.৩৯, বরিশাল বোর্ডে ৮১.৮৫, রাজশাহী বোর্ডে ৮১.২৪, ঢাকা বোর্ডে ৭৯.২১, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৭.৫৬, কুমিল্লা বোর্ডে ৭১.১৫, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭০.৩২, যশোর শিক্ষাবোর্ডে ৬৪.২৯ ও ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ডে ৬৩.২২। যা যশোর বোর্ডের জন্য রীতিমতো লজ্জাকর বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন। সমালোচনা করেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষও।

যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে এ বছর এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এরমধ্যে পাস করেছে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন। বিজ্ঞান বিভাগে ১১ হাজার ৯৯৮ জন ছেলের মধ্যে ১০ হাজার ৪৬৪, ১১ হাজার ২৩৭ জন মেয়ের মধ্যে নয় হাজার ৭৪৯, মানবিক বিভাগে ৪১ হাজার ৪৬০ জন ছেলের মধ্যে ২০ হাজার ৩৫০, ৪৪ হাজার ৭৪০ জন মেয়ের মধ্যে ২৮ হাজার ২৩৪, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে আট হাজার ৭৪৩ জন ছেলের মধ্যে পাঁচ হাজার ৪২৯ ও ছয় হাজার ৪৮৪ জন মেয়ের মধ্যে চার হাজার ৫৩৪ জন পাস করেছে।

গত চার বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যশোর শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে ২০২১ সালে পাসের হার ছিল ৯৮.১১। ২০২২ সালে ৮৩.৯৫, ২০২৩ সালে ৬৯.৮৮ ও ২০২৪ সালে ৬৪.২৯ শতাংশ। সময় যত যাচ্ছে যশোর শিক্ষা বোর্ডে পাসের হারে ততটায় হতাশা তৈরি হচ্ছে। জিপিএ-৫ কমেছে আশঙ্কাজনক হারে। ২০২১ সালে ২০ হাজার ৮৭৮, ২০২২ সালে আট হাজার ৭০৩ ও ২০২৩ সালে আট হাজার ১২২ জন জিপিএ-৫ পায়।

যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার ও সদ্য বদলি হওয়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডক্টর বিশ্বাস শাহীন আহম্মদ বলেছিলেন, এসব পরীক্ষার্থী ২০১৯ সালে জেএসসি পাস করে। করোনার কারণে তারা ঠিকমতো ক্লাস করতে পারেনি। এইচএসসিতে ১৩ টি বিষয় পড়তে তারা ১৬ মাস সময় পায়। এ কারণে ইংরেজির দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এ বছর যশোর বোর্ডে ৩১ শতাংশ পরীক্ষার্থী ইংরেজিতে অকৃতকার্য হয়েছে বলে দাবি করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক।

বৃহস্পতিবার রাতে পুন:নিরীক্ষার আবেদনের শেষ দিনে রেকর্ড সংখ্যক আবেদনের বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ডক্টর বিশ্বাস শাহিন আহম্মদকে কয়েকদফা ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!