জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর এবার এলপি গ্যাসের দাম নিজেরাই বাড়িয়ে দিয়েছে কোম্পানীগুলো। গত সপ্তাহে সরকার প্রতি সিলিন্ডারে ৩৫ টাকা কমালেও তার কোন প্রভাব পড়েনি খুচরা বাজারে, উপরন্তু নিজেরাই বাড়িয়ে দিয়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। ফলে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সাধারণ মানুষের কঁপালে।
চলতি আগস্ট মাসের জন্য ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২১৯ টাকা নির্ধারণ করা হয় গত ২ আগস্ট। গত মাসে এর দাম ছিল ১ হাজার ২৫৪ টাকা। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল ঐদিন বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে নতুন দাম ঘোষণা করেন।
কিন্তু মঙ্গলবার নগরীর কয়েকটি দোকান ঘুরে দেখা গেছে, ডেল্টা, জেএমআই, ফ্রেস, দুবাই বাংলাদেশ, ইউনিক ও বিএম নামে কোম্পানীর গ্যাস বর্তমানে ১ হাজার ৩শ’ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। যমুনা এবং বসুন্ধরা যথাক্রমে ১ হাজার ৩২০ ও ১ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
দোলখোলা ইসলামপুর জামে মসজিদ সংলগ্ন অনিস গ্যাস হাউসের মালিক মো: আনিস বলেন, এ মাসের শুরুতে বাংলাদেশ রেগুলেটরি কমিশন ৩৫ টাকা গ্যাসের দাম কমিয়েছিল। সে সময় তিনি গ্যাস বিক্রি করেছেন ১ হাজার ২৫০ টাকায়। ৭ আগস্ট থেকে প্রতিটি গ্যাসের বোতলে বেসরকারি কোম্পানীগুলো ৫০ থেকে ১শ’ টাকা করে মূল্য বৃদ্ধি করেছে। সরকার দাম কমালেও কোম্পানীগুলো সরকারের কথায় কোন কর্ণপাত করেনি। বরং আরও দাম বাড়িয়েছে। তাছাড়া তিনি গ্যাসের অগ্রীম টাকা বুকিং দিয়ে ৭ দিন পর দোকানে বিক্রির জন্য কিছু গ্যাস পেয়েছেন। কোম্পানী থেকে বর্ধিত দরে কিনে তাকে এ দমে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জুয়েল ট্রেডার্সের মালিক মো: নুর আলম বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। অগ্রীম টাকা দিলেও সময় মতো গ্যাস পাওয়া যাচ্ছেনা। তাছাড়া ৮০ টাকার ডলার ১১৪ টকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির দামও বেড়ে গেছে।
দুবাই বাংলাদেশ গ্যাস কোম্পানীর মার্কেটিং অফিসার মো: রিপন বলেন, দেশে ডলারের সংকট দেখা দিয়েছে। ডলারের অভাবে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছেন না। তাছাড়া গ্যাসের সংকট প্রকট হয়েছে। তবে কতদিন উর্ধ্বমূল্য থাকবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
শান্তিধাম মোড়ে গ্যাস ক্রেতা শহিদুল ইসলামের সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর বেড়েছে চালের দাম । এরপর বাড়ল গ্যাসের দাম। আয় বাড়েনি তার, কিন্তু ব্যয় বেড়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যে বেতন পান তা দিয়ে সংসার চালানো এখন দায় হয়ে পড়েছে তার।
আযম খান কর্মাস কলেজের সামনে কথা হয় জামিলা বেগমের সাথে। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। দিন দিন মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন।
খুলনা গেজেট/টি আই