পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নে মসজিদের দুই পরিচালনা কমিটির মধ্যে বিরোধ দেখা দেওয়ায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
ওই ইউনিয়নের ভাওড়া সরকারপাড়া জামে মসজিদ এলাকা এবং এর ৪০০ গজ পরিসীমার মধ্যে গতকাল সোমবার ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাফিজুর রহমান ১৪৪ ধারা জারি করেন। এরই মধ্যে মসজিদ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, ভাওড়া সরকারপাড়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে দুটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। দুই কমিটির পক্ষ থেকে দুজন ইমামও নিয়োগ দেওয়া হয়। দুই কমিটি ও দুই ইমামের বিষয়ে গ্রামটিতে দীর্ঘদিন ধরে মতবিরোধ চলে আসছে।
এর মধ্যে গতকাল সোমবার বাদ এশা মসজিদের ভেতর সভা করে দুই কমিটির পক্ষ থেকে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ে পৃথক জামাতের কথা বলা হয়। এক কমিটি সকাল সাড়ে ৭টা এবং আরেক কমিটি সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের জামাত আয়োজনের সময় নির্ধারণ করে। এ নিয়ে ওই এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে গতকাল রাত ১১টার দিকে ইউএনও মো. হাফিজুর রহমান, মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলম চাঁদ ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন ভাওড়া সরকারপাড়া মসজিদে যান। সেখানে দুপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় এক জামাতে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে এক পক্ষের সাহাদত হোসেন, লেবু মিয়া ও পিন্টুসহ তাঁদের সমর্থকেরা রাজি না হওয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রেখে দুই জামাতে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়। তবে, প্রশাসনের লোকজন চলে যাওয়ার পর ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরে নামাজকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা থাকায় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪(১) ধারার ক্ষমতাবলে ইউএনও মো. হাফিজুর রহমান গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ১৪৪ ধারা জারি করেন। আজ মঙ্গলবার ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি বলবৎ থাকবে। এরই মধ্যে মসজিদ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ইউপি সদস্য মো. শহিনুর রহমান বলেন, ‘মসজিদ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এজন্য প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ভাওড়া নয়াপাড়া মসজিদে গিয়ে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছি।’
মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা হোসেন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।