নগরীর ইস্টার্ণগেট এলাকায় ত্রিপল মার্ডারের ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন জাফরীন হাসানসহ ৪জনকে আটক করেছে পুলিশ। লোমহর্ষ এঘটনার ৪৮ঘন্টা পর আজ শনিবার রাতে নিহত সাইফুল ইসলামের পিতা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ২২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫/১৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার মূল আসামী শেখ জাকারিয়া ও তার ভাই মিল্টন, কবিরসহ অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সন্ধান চলছে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রের।
কেএমপি’র মুখপাত্র এডিসি কানাইলাল সরকার বলেছেন, নিহত মোঃ সাইফুল ইসলামের পিতা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের (যার নং-১২, ১৮-৭-২০২০ইং) করেছেন। মামলায় ২২জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬জনকে আসামী করা হয়েছে। আটককৃতদের নাম এজাহারে থাকায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। অন্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গুলিবর্ষণে ঘটনায় ব্যবহৃত অবৈধ অস্ত্র এখন উদ্ধার করা যায়নি। তবে অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে, আজ শনিবার বিকেল ৫টার দিকে যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার দাতপুর গ্রাম থেকে শেখ জাফরীন হাসানকে আটক করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। জাফরিনকে আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে জাফরীন, জাকারিয়া ও মিল্টনের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মিছিল করে।
জানা গেছে, হামলার সময় বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং গুলিতে হতাহতের ঘটনায় এলাকার জনপ্রতিনিধিদের ঘটনাস্থলে না আসায় তাদের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। এলাকার পরিবেশ এখন থমথমে শান্ত। তবে যে কোন পরিস্থিতির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে মশিয়ালী গ্রামে শেখ জাকারিয়া-জাফরীন, কবির ও মিল্টনদের হামলায় ৩জন নিহতের ঘটনাটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টীম তদন্ত করছে।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছেন, যশোর বাঘারপাড়া উপজেলার দাতপুর এলাকা থেকে শনিবার বিকাল ৫টায় আটক হয় শেখ জাফরিন হাসানকে। এরআগে শুক্রবার যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া থেকে আটক হয় জাফরিন শেখের সহযোগী জাহাঙ্গীরকে। পরবর্তীতে শেখ জাকারিয়ার শ্বশুর কোরবান আলী ও শ্যালক আরমানকে আটক করে পুলিশ।
খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র ও পলাতকদের গ্রেফতারে এখনো অভিযান চলমান। যেহেতু ঘটনাটি জঠিল ও ট্রিপল মার্ডার একজন গণপিটুনিতে মোট চারজন নিহত হয়েছেন, সে কারণে মামলা একটু বিলম্ব হল।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মুজিবর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে শেখ মোঃ জাকারিয়া, তার ভাই জাফরীন হাসান ও মিল্টন পুলিশে সোর্পদ করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এঘটনার পর গ্রামবাসী জাকারিয়ার বাড়িতে এবিষয়ে জিজ্ঞেস করতে যায়। এসময় জাকারিয়ার সাথে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শেখ মোঃ জাকারিয়া, জাফরীন হাসান, কবির ও মিল্টন তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ। গুলিতে ঘটনাস্থলে নজরুল ইসলাম ও গোলাম রসুল নিহত হন। পরে সাইফুল ইসলামও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। জখম অবস্থায় শামীম, রবি, সুজন, রানা ও খলিলসহ ৮জন খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এইদিন রাত ২টার দিকে ক্ষুব্ধ অপরপক্ষের গণপিটুনিতে জাকারিয়ার সহযোগী জাহিদ শেখ নিহত হন।
খুলনা গেজেট/এআইএন