ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় প্রদেশ হরমোজগানে পর পর ৬ মাত্রার দু’টি ভূমিকম্পে ৫ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলের দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
ইরানের কেন্দ্রীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের হরমোজগান প্রাদেশিক শাখার প্রধান মেহরদাদ হাসানজাদেহ দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, ‘আমাদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসস্তুপ থেকে এখন পর্যন্ত ৫ জনের মৃতদেহ ও ১২ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
‘অনেক এলাকায় বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। আমরা সেসব এলাকায় তাঁবু সরবরাহ করছি।’
এক বিবৃতিতে ইউরোপের ভূমিকম্প গবেষণা সংস্থা ইউরোপিয়ান মেডিটেরেনিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১ টা ৩২ মিনিটে দিকে আঘাত হানে প্রথম ভূমিকম্পটি। হরমোজগান প্রদেশের বন্দর খামির শহরের কাছে ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল।
পরবর্তী ভূমিম্পটি আঘাত হানে তার প্রায় দু’ঘণ্টা পর— রাত ৩ টা ২৪ মিনিটে হরমোজগান প্রদেশের সায়েহ খোশ গ্রামে। এছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় ভূমিকম্পের মাঝের দু ঘন্টায় ৪ মাত্রার কয়েকটি ভূকম্পন হয়েছে।
প্রদেশের বন্দর লেনগেহ জেলার গভর্নর ফোয়াদ মোরাজাদেহ ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ইরনাকে বলেন, ‘যারা হতাহত হয়েছে, তারা সবাই প্রথম ভূমিকম্পটির শিকার। দ্বিতীয় ভূমিকম্পে কেউ নিহত বা আহত হয়নি, কারণ প্রথম ভূমিকম্পের পরই অধিকাংশ মানুষ ঘরবাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিল।’
ভূগর্ভের টেকটোনিক প্লেটের কয়েকটি প্রধান ফল্ট লাইনের ওপর অবস্থান হওয়ায় ইরানে প্রায় নিয়মিতই ক্ষুদ্র বা মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়। তবে গত কয়েক দশকে বেশ কিছু প্রাণঘাতী ভূমিকম্পও দেখেছে দেশটি।
১৯৯০ সালে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে ইরানের উত্তরাঞ্চলে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন। তারপর ২০০৩ সালে দেশটির কেরমান প্রদেশে ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিলেন প্রায় ৩১ হাজার মানুষ।
মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে ইরানে যে ভূমিকম্প হয়েছে, তার কম্পন সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন, ওমান, কাতার, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানেও অনুভূত হয়েছে।