খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিম মারা গেছেন
  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু

ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ১৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশোধমূলক হামলায় ১৮ ইরানপন্থি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এছাড়া এই হামলায় দেশটিতে ইরানপন্থি দলগুলোর আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত স্থাপনাসহ অন্তত ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও ধ্বংস করা হয়েছে।

সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী একটি গোষ্ঠীর বরাত দিয়ে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন সামরিক বাহিনী শুক্রবার ইরাক এবং সিরিয়ায় ইরানি বাহিনী এবং তেহরান সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা চালিয়েছে। গত সপ্তাহে সিরিয়া সীমান্তবর্তী জর্ডানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার জবাবে যুক্তরাষ্ট্র এই হামলা চালাল।

প্রাণঘাতী সেই হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হয়েছিলেন। এই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ইরান-সমর্থিত বাহিনীকে দায়ী করেছিল। পরে গত রোববারের ড্রোন হামলায় সৈন্যদের মৃত্যুর প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটন থেকে ব্যাপক বিমান হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিক্রিয়া আজ থেকে শুরু হয়েছে। এটি (প্রতিক্রিয়া) আমাদের পছন্দের সময়ে এবং জায়গায় চলতে থাকবে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য বা বিশ্বের অন্য কোথাও সংঘাত চায় না। তবে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চায় তাদের সবাইকে এটি জানাতে হবে: আপনি যদি একজন আমেরিকানকেও ক্ষতি করেন তবে আমরা জবাব দেব।’

এএফপি বলছে, উত্তেজনার সাম্প্রতিক বৃদ্ধির পরও ওয়াশিংটন এবং তেহরান উভয়ই সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে চেয়েছে। আর তাই নিজেদের ওপর আরও হামলা এড়াতে পাল্টা হামলা চালানোর সময় তেহরানের সাথে সরাসরি সংঘর্ষ এড়াতে ইরানের ভূখণ্ডে আঘাত করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের কুদস ফোর্স এবং সেইসাথে তাদের ‘সংশ্লিস্ট মিলিশিয়া গোষ্ঠীকে’ লক্ষ্য করে আমেরিকান বাহিনী ‘৮৫টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। এই হামলায় বহু যুদ্ধবিমান অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা দূরপাল্লার বোমারু বিমানও রয়েছে’।

সেন্টকম বলেছে, ‘বিমান হামলায় ১২৫টিরও বেশি নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে’। ইরানি বাহিনী ও তাদের সমর্থিত মিলিশিয়াদের যারা মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলায় সহায়তা করেছিল তাদের কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং গোয়েন্দা কেন্দ্রের পাশাপাশি রকেট, মিসাইল এবং ড্রোন স্টোরেজ অবকাঠামোতেও হামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টকম।

এদিকে সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটেন-ভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ‘অন্তত ১৮ জন ইরানপন্থি যোদ্ধা’ নিহত হয়েছেন।

পর্যবেক্ষণকারী এই সংস্থাটি এএফপিকে জানিয়েছে, দেইর এজর শহর থেকে ৬২ মাইল (১০০ কিলোমিটার) ইরাকি সীমান্তের কাছে আলবু কামালের কাছ পর্যন্ত বিস্তৃত পূর্ব সিরিয়ার বিশাল অংশে চলমান অভিযানে অস্ত্রের ডিপোসহ ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলোর আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত অন্তত ২৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ধ্বংস করা হয়েছে।’

এছাড়া শুক্রবার সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বলেছে, সিরিয়ার মরুভূমি অঞ্চলে এবং সিরিয়া ও ইরাকি সীমান্তের বেশ কয়েকটি স্থাপনায় ‘আমেরিকান আগ্রাসনের’ ফলে অনেক লোক নিহত এবং আহত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ইরাক ও সিরিয়াজুড়ে ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের অগণিত সংখ্যক ঘাঁটি, অস্ত্রের গুদাম এবং প্রশিক্ষণ ডিপো রয়েছে। এই মিলিশিয়ারা ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের হাতে প্রশিক্ষিত, সজ্জিত। এছাড়া তারাই এগুলোর অর্থায়ন করে। কিন্তু তারা সবসময় আইআরজিসির মাধ্যমে পরিচালিত হয় না।

এছাড়া জর্ডানের সেই সামরিক ঘাঁটিতে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স ইন ইরাক নামে একটি গ্রুপ।

মূলত ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়াদের বেশ কয়েকটি গোষ্ঠীকে একত্রিতভাবে বোঝাতে এই নামটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যার মধ্যে কিছু গোষ্ঠী আবার অপ্রত্যাশিত ভাবে এই অঞ্চলে সবার অভিন্ন শত্রু ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থেকে অতীতে লড়াইও করেছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!