‘গরীব মানুষ। সম্পত্তি বলতে ১৮ শতক বাস্তভিটা। জীবিকা নির্বাহের জন্য পরের জমিতে কাজ করেছি। সামান্য আয় দিয়ে ৫ সদস্যর পরিবারের ভরণ-পোষণ দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। তাই বাঁচার তাগিদে ছাগল পালন শুরু করি। পরিবারের তিনজনের কর্মসংস্থান হয়েছে। এখন আমি স্বাবলম্বী। খামারটাকে বড় করে আরও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করার স্বপ্ন দেখছি। সে জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করছি।’
এমনটাই জানালেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কলাতলা ইউনিয়নের অতুলনগর গ্রামের মৃত-নিত্যানন্দ বৈদ্যর ছেলে ইপস বৈদ্য (৫০)।
ইপস বৈদ্য তাঁর ভাগ্য বদল সম্পর্কে আরও জানান, স্ত্রী মনিকা বৈদ্য, ছেলে তাপস বৈদ্য, দুর্জয় বৈদ্য ও মেয়ে মিতালী বৈদ্যকে নিয়ে তাঁর ৫ সদস্যর পরিবার। নিজের চাষের জমি না থাকায় পরের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেছেন। সামান্য আয় দিয়ে সংসার চলত না। তাই ভাগ্য বদলের জন্য ২০১৩ সালে মাত্র একটি ছাগল দিয়ে খামার শুরু করেন। এই ১০ বছরের তিনি প্রায় ৫০০ ছাগল বিক্রি করেছেন। এখন তাঁর খামারে ছোট বড় মিলিয়ে মোট ১২৭টি ছাগল। ২৬ টি ছাগলের মধ্যে ১৩ টি গর্ভবতী ও প্রসব করেছে ১৩ টি। খাসি রয়েছে ১৭ টি ও পাঠা ৬ টি। এছাড়া বিভিন্ন বয়সের বাচ্চা রয়েছে ৭৮ টি। এখন তাঁর মাসিক আয় প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও ছেলেসহ তিনজনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অভাবকে দূরে ঠেলে স্বাবলস্বী হয়েছেন। বড় ছেলে ও মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বড়ছেলে বিএ পাশ করে একটি কোম্পানীতে চাকুরী করছেন। ইপস বৈদ্য এখন খামারটাকে বড় করে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বপ্ন দেখছেন। এজন্য ছাগলের জন্য বড় ঘর ও কিছু জমির প্রয়োজন। এ গুলো জোগাড় করতে তাঁর দুই লাখ টাকা লোনের প্রয়োজন। আর এই লোন পেয়ে স্বপ্ন পূরণের জন্য সে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ছোটাছুটি করছেন।
চিতলমারী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আহম্মেদ ইকবাল বলেন, ‘চিতলমারীতে ২৬ টি ছাগলের খামার আছে। এরমধ্যে মাত্র ৩টি নিবন্ধিত। ইপস বৈদ্য গতদিন (১৫ মার্চ) আমাদের কাছে লোনের জন্য এসেছিল। আমরা তাঁকে ব্যাংকে গিয়ে ম্যানেজারের সাথে কথা বলতে বলেছি। প্রয়োজনে আমরা ম্যানেজারকে সুপারিশ করব।’
তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা বলেন, ‘ইপস বৈদ্য গতদিন (১৫ মার্চ) প্রত্যয়নের জন্য আমার অফিসে এসেছিল। আমরা তাকেঁ আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করব।’
খুলনা গেজেট/কেডি