কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলনরত রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর শাখা ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে ইডেন কলেজের বকুলতলায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছেন ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা আফরোজ, শাহিনুর সুমি, সুমাইয়া সাইনা, সানজিদা হক ও স্কাইয়া ইসলামসহ ১০ জন। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যোগ দিতে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর গরম পানি ঢেলে দেন এবং মারধর করেন। এতে সুমিসহ কয়েকজন আহত হন। তিনি এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ঢামেকের জরুরি বিভাগে আহত সুমির চিকিৎসা চলছে ।
ভুক্তভোগীরা জানান, হামলার নেতৃত্বে ছিলেন—ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা, সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা, ছাত্রলীগ নেত্রী আয়শা ইসলাম মীম, কল্পনা ও জেরিন আক্তারসহ ৪০-৫০ জন নেতা-কর্মী।
আহত সায়মা আফরোজ বলেন, শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেতে না পারে সে জন্য ছাত্রলীগ হলে হলে বাধা দেয়। পরে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে বের করি। এ সময় বকুলতলায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করে। হামলা করার পরেও আমরা দমে যাইনি।’
সায়মা আফরোজ আরও বলেন, ‘প্রথম গেট ও দ্বিতীয় গেট হয়ে ঢুকে যারা আন্দোলনে যুক্ত হতে চাচ্ছে তাদের হল থেকে বের করে নিয়েছি। আহতরা ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। হামলার সময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরাও উপস্থিত ছিলেন কিন্তু ছাত্রলীগকে হামলা থেকে নিবৃত্ত করতে কোনো কিছু করেননি তাঁরা।’
হামলার অভিযোগের বিষয়ে তামান্না জেসমিন রিভা বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা করেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমরা নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে ছিলাম। ছাত্রফ্রন্টের কিছু চিহ্নিত নেতা-কর্মী আমাদের মেয়েদের ওপর হামলা করে। তারা হামলা করে আমাদের ওপর অভিযোগ দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে জানতে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগমকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলনে রয়েছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।
খুলনা গেজেট/এএজে