যশোরের হামিদপুরের ইজিবাইক চালক মফিজুর রহমান হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকতিয়ার বিশ্বাসকে আটক করেছে র্যাব। গতকাল বুধবার সাতক্ষীরা থেকে তাকে আটক করে।
ইকতিয়ার বিশ্বাস (৪৩) যশোর জেলার কোতয়ালী থানার হামিদপুর গ্রামের মকছেদ আলী বিশ্বাসের ছেলে।
র্যাব-৬ এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইজিবাইক চালক হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ইকতিয়ার গোপনে সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হয়ে ভারতে পালানোর চেষ্টা করলে র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্পের একটি আভিযানিক বুধবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সদর হাসপাতাল এলাকা হতে ইকতিয়ার বিশ্বাস কে গ্রেপ্তার করে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২২ জুন রাতে যশোর জেলার হামিদপুরের ইজিবাইক চালক মফিজুর রহমান তার হেলপার নয়নকে নিয়ে পুরাতন কেন্দ্রীয় বাস স্টান্ড (মনিহার মোড়) থেকে বাড়ির পথে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে হেলপার নয়নকে ইজিবাইক দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলে এবং তিনি ময়লাখানার সামনে নেমে যায়। নয়নকে ভিকটিম মফিজুর সেসময় জানায়, ইকতিয়ারের নিকট সে ভাড়ার টাকা পাবে এবং সেই টাকা নেওয়ার জন্য ইকতিয়ার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাকে ময়লাখানার সামনে ডেকেছে। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায় না। ২৪ জুন সকালে হামিদপুর ময়লাখানার পাশের একটি পুকুর থেকে মফিজুর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী আয়েশা বেগম বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার পরপরই আইনশৃংখলা বাহিনী হত্যার ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আলামত ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামি ইকতিয়ার ও অপর একজন আসামিকে আটক করে। একে একে বেরিয়ে আসে রহস্য এবং তারা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে উঠে আসে তাদের আরো তিন সহযোগীদের নাম। মুলত পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় মফিজুরকে এবং লাশ ফেলে দেয়া হয় হামিদপুর ময়লাখানার পেছনের একটি পুকুরে।
উক্ত মামলার তদন্ত পূর্বক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। বিজ্ঞ আদালত বিচারকার্য শেষে এই হত্যায় আসামীদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় গত ২০ মে তারিখ পাঁচজন আসামিকেই মৃত্যুদন্ডের সাজা প্রদান করেন। এ সময় তিনজন আসামী আদালতে হাজির থাকলেও ইকতিয়ার ও অপর একজন আসামি পলাতক থাকে। বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক সাজা প্রদান পূর্বক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে, র্যাব-৬, যশোর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদ্বয়কে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, উক্ত হত্যা মামলায় সে ধারণা করেছিল তার সাজা হবে তাই রায়ের দিন ইচ্ছা করে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হননি। তার মৃত্যুদন্ডের সাজা হয়েছে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সে গত ২৩ মে সাতক্ষীরা জেলার সদর থানাধীন সদর হাসপাতাল এলাকায় নিজেকে আত্মগোপন রেখে অবৈধ পথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তার বিরুদ্ধে উক্ত হত্যা মামলা ছাড়াও ০১ টি ডাকাতি মামলা ও ০১ টি অন্যান্য ধারায় মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে যশোর জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম