ইজিবাইকের জন্য খুন করা হয় চালক নয়নকে। রাত ১০ টার দিকে ফোন করে ডেকে নেওয়া হয় তাকে। আলীর ক্লাব দারুস সালাম মহল্লার মসজিদের পিছনে একটি পরিত্যাক্ত মাঠের ভেতর নিয়ে হত্যা করা হয় নয়নকে। শনিবার বিকেলে ইজিবাইক চালক নয়ন হত্যাকান্ডে নিজেদের অবস্থান বর্ণনা করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে নয়ন ও হৃদয়। তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন অতিরিক্ত সিএমএম সুমী আহমেদ। জবানবন্দি শেষে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আলামিন বলেন, ইজিবাইক চালক নয়নের সাথে পূর্ব পরিচয় ছিল দুর্বৃত্তদের। বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয় নয়ন। বিভিন্নস্থানে ট্রিপ দিতে থাকে সে। রাত ১০ টার দিকে তাকে ফোন দিয়ে আলীর ক্লাবের সামনে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর চারজন নয়নকে দারুস সালাম এলাকার একটি মসজিদের পিছনের রাস্তা দিয়ে মহিমা খাতুনের পরিত্যাক্ত জমিতে নিয়ে যায়। ইজিবাইক থেকে নয়নকে নামানো হয়। পরপরই আসামি হৃদয় পেছন থেকে নয়নের হাত ধরে রাখে। পারভেজ গলা চিপে ধরলে নয়ন পানিতে পড়ে যায়। পারভেজ পানির ভেতর মাথা চুবিয়ে রেখে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। মারা যাওয়ার পর আসামি নয়ন মৃতের গায়ের ওপর কিছুক্ষণ বসে থাকে।
নয়নের লাশ কচুরিপানার মধ্যে ফেলে ইজিবাইক নিয়ে তারা শহরের বিভিন্নস্থানে ঘুরতে থাকে। রাত বেশী হওযায় পারভেজ ও রবি পথে নেমে যায়। রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ইজিবাইক নিয়ে হৃদয় ও নয়ন ময়ুর আবাসিক প্রকল্প এলাকা হতে হরিণটানা থানা পুলিশের হাতে আটক হয়। তখন তারা পুলিশের সামনে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের বিষয়টি স্বীকার করে।
তিনি আরও বলেন, হত্যাকান্ড সম্পর্কে আসামি রবি ও পারভেজ ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। তাদের কথা অসংলগ্ন। রাতে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
যেভাবে হত্যাকান্ডের রহস্য উন্মোচন হল
রাতে ইজিবাইক চালক নয়নকে হত্যার পর আসামিরা বিভিন্নস্থানে ইজিবাইক নিয়ে ঘুরতে থাকে। রবি ও পারভেজকে নামিয়ে দিয়ে আসামি হৃদয় ও নয়ন রাত সাড়ে ৩ টার দিকে ইজিবাইক চালিয়ে শহর থেকে বের হওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা সোনাডাঙ্গা বাইপাস হয়ে জয়বাংলার মোড় পার হয়ে বের হতে চেয়েছিল। কিন্তু গভীর রাতে ইজিবাইক নিয়ে ময়ুরব্রীজ এলাকা হয়ে যেতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ছিনতাইয়ের ঘটনা বলে। পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
সকালে চালক নয়নের ছোট মামা মধু হরিণটানা থানায় নয়নের ইজিবাইক পড়ে থাকতে দেখে থানায় জিজ্ঞাসা করে। এর মধ্যে নিহত চালকের বড় মামা মধুকে ফোন করে বলে নয়নের লাশ পাওয়া গেছে। তিনি ঘটনাটি থানায় জানানোর পর সোনাডাঙ্গা থানা আসামি নয়ন ও হৃদয়কে হরিণটানা থানা থেকে সোনাডাঙ্গা থানায় নিয়ে আসে। তাদের দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদে সকালে অপর দুই আসামি পারভেজ ও রবিকে যথাক্রমে দারুস সালাম মহল্লা ও আরাফাত আবাসিক এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে নিহতের মা উল্লিখিত ৪ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
খুলনা গেজেট / আ হ আ