খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৯০
  কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বাসা থেকে ২ সন্তানসহ বাবা-মায়ের মরদেহ উদ্ধার
  কুমিল্লায় অটোরিকশায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত বেড়ে ৭

ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হত্যা : ৮ মাসেও খুলনায় আসেনি ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন

একরামুল হোসেন লিপু

বারাকপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গাজী জাকির হোসেন হত্যার ৮মাসেও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট খুলনায় পৌঁছায়নি। ফলে মামলার তদন্ত কাজ যেমন শেষ হয়নি। তেমনি তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে পারছেন না।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময়েও মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় তারা হতাশ হচ্ছেন। উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।

মামলার এজাহার ও পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এলাকার আধিপত্য, ইউপি নির্বাচন ও শেখ আনছারউদ্দিনের সাথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০২২ সালের ১২ জুন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন। তিনি ওইদিন সন্ধ্যায় নিজের মাছের ঘের থেকে তাঁর এক সহযোগীসহ মোটরসাইকেলযোগে বারাকপুর বাজার সংলগ্ন বাড়ি ফেরার পথে বোয়ালিয়ারচর প্রাইমারী স্কুলের সামনে পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। হামলাকারীরা তাঁকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা, হাত ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী ঘেরে ফেলে পালিয়ে যায়। আশংকাজনক অবস্থায় এলাকাবাসী ও স্বজনরা প্রথমে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে পরদিন প্রথমে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা করে। দীর্ঘ ৫০ দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে ২ আগস্ট দিবাগত রাত ১ টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।
সন্ত্রাসী হামলার একদিন পর গাজী জাকিরের ছেলে গাজী আরাফাত হোসেন কাইফ ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জনকে আসামী করে দিঘলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে এই মামলাটিই হত্যা মামলায় রূপ নেয়।

হামলা ঘটনার পর গাজী জাকির হোসেন আহত অবস্থায় হাসপাতালে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের কাছে তাঁর উপর হামলাকারী তিনজনের নাম বলেছেন। যার ভিডিও রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে। ওই ভিডিওতে হামলাকারী হিসেবে লাখোয়াটী গ্রামের সোহেল, শামীম ও নন্দনপ্রতাম গ্রামের আলমগীর মোল্যার নাম উঠে আসে। কিন্তু তারপরও মামলা অগ্রগতি না হওয়ায় নিহতের পরিবার হতাশা ব্যক্ত করেছেন।
তারা বলেছেন, মামলার এজাহারভুক্ত ১০ আসামির মধ্যে ৮ জন আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছে। এতে তারা আতংকিত।

নিহত গাজী জাকির হোসেনের স্ত্রী কাকলি বেগম খুলনা গেজেটকে বলেন, মামলার জন্য অনেক টাকা-পয়সা খরচ করছি। মামলায় শেষ পর্যন্ত প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাবে কিনা জানিনা। পোস্টমর্টেম রিপোর্টের জন্যও কম খরচ হয়নি। কিন্তু এখনো পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ঢাকা থেকে আসেনি।

তবে ‘মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টের কারণে মামলার চার্জশিট প্রদানে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিঘলিয়া থানার এসআই রানা প্রতাপ ঘোষ। তিনি বলেন, হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত হচ্ছে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট। যেটি এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। আশা করি খুব দ্রুতই আমরা রিপোর্ট পেয়ে যাবো। মামলার এজাহারভূক্ত ১০ আসামীর মধ্যে ৮ জন জামিনে বাইরে আছেন। বাকী দুই আসামী জেল হাজতে রয়েছেন। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর দ্রুত চার্জশীট দেওয়ার চেষ্টা করবো।

অপরদিকে মামলার বাদী নিহত গাজী জাকির হোসেনের পুত্র গাজী আরাফাত হোসেন কাইফকে ২৪ মার্চ দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত ও পিতা হত্যা মামলার অন্যতম আসামী শেখ আনছার উদ্দিন হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত ৮ নং আসামী করা হয়েছে। বাদী পলাতক থাকায় মামলার বিষয়ে তাঁর সংগে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!