খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  রাঙামাটির কাউখালীতে পিকআপভ্যানের চাপায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ৫ যাত্রী নিহত
  কুয়েট উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

আ. লীগ নিষিদ্ধসহ চার দফা দাবি ইনকিলাব মঞ্চের

গেজেট ডেস্ক

আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করে আ. লীগকে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ করাসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। নির্ধারিত সময়ে দাবি মানা না হলে আগামী ৫ অগস্ট শাহবাগ থেকে ‘মার্চ ফর বাংলাদেশ’ কর্মসূচি থেকে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর শাহবাগে বিকেল সাড়ে তিনটায় জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ‘শহীদী সমাবেশে’ এই ঘোষণা দেয় সংগঠনটি।

সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সদস্যরা, জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, আপ-বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ, আমার বাংলাদেশ-এবি পার্টির সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ প্রমুখ।

বক্তব্য প্রদানকালে এনসিপির (উত্তরাঞ্চল) মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, সংস্কার না নির্বাচন, আপনারা এই খেলা বাদ দিয়ে বিচার নিশ্চিত করুন। বর্তমান সরকারের বৈধতা হচ্ছে শহীদরা। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের হত্যাকাণ্ডের বিচারের আগে বাংলাদেশে কোনো কিছু প্রাসঙ্গিক হতে পারে না।

আপ-বাংলাদেশের সংগঠক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ জন্য মাঠে নামতে হচ্ছে। এটা লজ্জাজনক। ‌আমরা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবে না।

এসময় জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ইমাম হাসানের ভাই রবিউল আউয়াল বলেন, এ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় কেন আমাদের রাস্তায় দৌড়াতে হবে। এখানে একটি প্রহসন চলছে। বাংলাদেশে সংস্কার হবে, নির্বাচন হবে; তবে তার আগে বিচার হওয়া লাগবে। সংস্কারের মূল বিষয় হওয়া উচিত বিচার।

বক্তব্য প্রদানকালে শহীদ সাইমের মা বলেন, যাত্রাবাড়ীতে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়। আমার ছেলের কী দোষ? সে আন্দোলন করতে নেমেছিল। তার হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। আমার বুকটা শূন্য করে দিয়েছে। আমার সোনার ছেলেটাকে হত্যা করছে। ঈদ গেল, আমি ঈদ করতে পারি নাই। আমাদের বুকে রক্তক্ষরণ হয়। আমার ছেলের হত্যার বিচার পাই নাই৷ এই স্বৈরাচার হাসিনাকে যেন দেশে এনে ফাঁসি দেওয়া হয়।

২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত মেজর তানভীর হায়দার নূরের স্ত্রী তাসনূভা মাহা বলেন, আজও আমার স্বামীকে পাওয়া যায়নি। একটা লাশ দাফন হয়েছে, সেটি আমার স্বামীর নয়। সেদিন আমার রুমের বাইরে তিনজন হিন্দিভাষী ছিল। আমার সন্তানদের কাপড় খুলে চেক করেছিল ছেলে নাকি মেয়ে।

এসময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে চার দফা দাবি উত্থাপন করেন। আগামী ১০০ দিন ৬৪ জেলায় গণসংযোগ করবে ইনকিলাব মঞ্চ। যদি এই সময়ের মধ্যে সরকার কার্যকর কোনো ভূমিকা গ্রহণ না করে, তাহলে আগামী ৫ আগস্ট শাহবাগ থেকে ‘মার্চ ফর বাংলাদেশ’ কর্মসূচি থেকে সচিবালয় ঘেরাও করবে জুলাই জনতা।

ইনকিলাব মঞ্চের চার দফা দাবিগুলো হলো-
১. সরকারকে আগামী ১০০ দিনের মধ্যে জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার শুরু করতে হবে এবং গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে প্রথমে নির্বাহী আদেশে, তারপরে আদালতের মাধ্যমে এবং সবশেষে রাজনৈতিক সমঝোতায় সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
২. শাপলা গণহত্যার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তায় তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রকৃত শহীদদের তালিকা প্রকাশ করে অবিলিম্বে এই গণহত্যার বিচার শুরু করতে হবে।
৩. পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে গঠিত কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং তাদের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।
৪. বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ বিচারের বিষয়ে স্পষ্ট ধারা উল্লেখ থাকতে হবে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!