খুলনা, বাংলাদেশ | ২৭ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১২ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯১৫
  ময়মনসিংহে ভিমরুলের কামড়ে বাবা-মেয়ের মৃত্যু
  এমন রাষ্ট্র গঠন করতে চাই যা নিয়ে দুনিয়ার সামনে গর্ব করা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
  আজ মধ্যরাত থেকে ইলিশ ধরা-বিপণনে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা

আ.লীগ-ছাত্রলীগের অপরাজনীতি যাতে না ফেরে সেটা সরকারের অঙ্গীকার

গেজেট ডেস্ক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের শিক্ষাঙ্গনে ছাত্র রাজনীতি বন্ধের কথা উঠছে কোনও কোনও মহল থেকে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, দেশের বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা হচ্ছে। সরকার সবার মতামত গ্রহণ করে তার অবস্থান পরিষ্কার করবে। তবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যে অপরাজনীতি করেছে সেই রাজনীতি যেন ক্যাম্পাসে ফিরে না আসে সেটা আমাদের অঙ্গীকার।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মাহফুজ আলম সাংবাদিকদের সামনে এই কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে আজ রাজধানীর তেজগাঁও অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ছাত্র সংগঠক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ব্যাপারে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন হয়।

মাহফুজ আলম বলেন, ছাত্র-শিক্ষক রাজনীতি নিয়ে প্রতিটি ক্যাম্পাসে আলোচনা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখন স্পষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হয়নি। কোন ফরমেটে রাজনীতি হবে সেই আলোচনা সব জায়গায় চলছে। আমরা চাই সমাজের বিভিন্ন অংশ, ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হোক। এরপর যে সারসংক্ষেপ আসবে সেই অনুযায়ী সরকার তার অবস্থান পরিষ্কার করবে।

তিনি বলেন, ছাত্রদের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক দরকার। কিন্তু সেই সম্পর্ক হবে ন্যায্যাতা ও সমতার ভিত্তিতে। প্রতিবেশীর সঙ্গে পারস্পারিক সমান সম্মান এবং ন্যায্যাতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে সার্ককে আরও কার্যকর করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

তিনি জানান, আজ এ সরকারের এক মাস পূর্ণ হয়েছে। গণআন্দোলনের সামনে ও পেছন থেকে যারা নেতৃত্বে দিয়েছেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে নানা বিষয় আলোচনা এসেছে। ছাত্ররা বাংলাদেশ পূর্ণগঠন ও পরিবর্তন কথা বলেছেন। সরকারের তরফ থেকে আহত ও নিহতের বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে। একটি ফাউন্ডেশন করে কাজটি দ্রুত এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহত পরিবারকে পূর্ণবাসন ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করার বিষয়টি এনেছেন। এ ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। সরকারপ্রধান সেটি শুনেছেন, কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত জানাননি। মাহফুজ আলম বলেন, সেখানে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নয়, আলোচনা হয়েছে ধর্মকে নিয়ে অপরাজনীতি করার বিষয়ে।

গণহারে মামলার প্রসঙ্গে মাহফুজ আলম বলেন, এ ব্যাপারে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার, এগুলো কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। কোনও ব্যক্তি তার ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে হামলা-মামলা করতে পারবে না। যারা ফ্যাসিবাদের দালাল ও দোসর হিসেবে যারা কাজ করেছে তাদের বিচার অবশ্যই হবে।

মাহফুজ বলেন, সবাইকে শুধু এতটুকু খেয়াল রাখবে যাতে কোনও কম্প্রোমাইজ না হয়। যারা শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়েছেন তাদের সঙ্গে বেইমানি যাতে না হয়। সরকার এ ব্যাপারে কঠোর। এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ভবিষতে আরও নেওয়া হবে। তবে জনগণ যাতে নিজের হাতে আইন তুলে না নেন সরকারের বার্তা সেটা।

মাহফুজ আলম বলেন, যারা এতদিন নানা প্ল্যাটফর্মে আসতে পারেনি তাদের আজ ডাকা হয়েছে। ধীরে ধীরে বাকিদের ডাকা হবে। সবাই সরকারকে তাদের পরামর্শ দেবেন, সেই সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হবে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত এই সরকারের মেয়াদ এক মাস পূর্ণ হয়েছে। সেই জায়গা থেকে আজ ছাত্রদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। সেখানে ছাত্ররা তাদের মতামত জানিয়েছেন। নানা সংস্কার কাজে হাতে দেওয়ার বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা তাদের অবহিত করেছেন। সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টারা মতামত দিয়েছেন।

ব্রিফিং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম, মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি কার্যালয় শাপলায় বেলা ১১টা থেকে মতবিনিময় সভা হয় যা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এতে ১৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের খোঁজখবর নেন। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!