খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বাস-মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে দুইজন নিহত
  মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭
  সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ বন্ধ
  সিইসিসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ আজ

আ. লীগ এখন বিরোধী দলের ভূমিকায়: আমির খসরু

গেজেট ডেস্ক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের ভূমিকা দেখলে মনে হয়, তারা বিরোধী দল হয়ে গেছে। বিএনপি কর্মসূচি দিচ্ছে, তারাও (সরকার) শান্তি কর্মসূচি দিচ্ছে।

বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি এবং সংসদ বাতিলসহ ১০ দফা দাবিতে শুক্রবার দুপুরে আয়োজিত এক সমাবেশে আমির খসরু এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (জেটেব) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে ।

খসরু বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি জনগণের সম্পদ রক্ষায় নেমেছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক দৈন্যতা এমন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে তারা জনগণকে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যর্থ হয়ে তারা বিএনপির কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।

বিএনপির কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করা চলবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনতা প্রমাণ করেছে, গুলি করে, হত্যা করে, গ্রেপ্তার করে ও মিথ্যা মামলা দিয়ে জনগণের গণজোয়ার বন্ধ করা যাবে না। সেটা বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রমাণ হয়েছে। সরকার পরিবহন হরতাল দিয়ে, মামলা দিয়ে, গ্রেপ্তার করে, হত্যা করে লক্ষ জনতাকে রুখতে পারেনি। আগামীতেও পারার কোনো সুযোগ নেই।

আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে খসরু বলেন, যতই শান্তি কর্মসূচি দেন, যতই জনগণের সম্পদ রক্ষার কথা বলেন, আপনারা জনগণের কাছে হাস্যকরভাবে পরিচিত হয়েছেন। জনগণ আপনাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেখে হাসে। আপনাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। আপনারা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছেন। এখন পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আদালতের আশ্রয় নিচ্ছেন।

রাষ্ট্রের কর্মকর্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে টিকে থাকার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, কেউ স্বাধীনতা যুদ্ধে পারেনি, ভাষা আন্দোলনে পারেনি, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও পারেনি। আজকেও পারবে না।

জনগণ ভয়কে জয় করেছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, জনগণের ভয়ে তারা মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, হত্যা এগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে সরে যাচ্ছে না। যত বেশি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হচ্ছে, জনগণ তত বেশি রাস্তায় নেমে আসছে এবং তাদের (সরকার) ভয়ের মাত্রা তত বেড়ে যাচ্ছে।

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এ কারণে কাঁচামাল আমদানির জন্য টেক্সটাইল মিলের মালিকরা এলসি খুলতে পারছে না। আওয়ামী লীগের লুটেরারা বিদেশে কীভাবে সম্পদ কিনছে, তার পূর্ণ বিবরণ আজকে গণমাধ্যমে এসেছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে আজকে রিজার্ভ শূন্যের কোটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

খসরু বলেন, আজ টেক্সটাইল মিলগুলো গ্যাসের অভাবে পোশাক উৎপাদন করতে পারছে না। তিন শিফটের পরিবর্তে এক শিফটে কাজ করছে। গ্যাসের উচ্চমূল্য দিয়ে টেক্সটাইল মিল চালানো সম্ভব হচ্ছে না। যেই গার্মেন্টস সেক্টরকে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গড়ে তুলেছিলেন, আজকে সেটা তারা (সরকার) সেটা ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আজকে মন্দির ভাঙচুর হচ্ছে, খ্রিস্টানদের চার্চে হামলা চলছে। খ্রিস্টানদের চার্চ তারা দখল করছে, বৌদ্ধদের মন্দিরে আগুন লাগানো হচ্ছে। কেউ রক্ষা পাচ্ছে না।

দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ মন্তব্য করে তিনি বলেন, বিশ্ব গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশের গণমাধ্যমের অধিকার হরণ নিয়ে প্রতিনিয়ত রিপোর্ট করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মিডিয়ার স্বাধীনতার ওপর যে হস্তক্ষেপ চলে, সেটি পর্যবেক্ষণের জন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলো একটি কমিটি নিযুক্ত করেছে।

তিনি বলেন, একটি দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, নির্বাচন, বাকস্বাধীনতা, আইনের শাসন কখন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণের অধীনে আসে, যখন সেই দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানবাধিকার, আইনের শাসন, বাকস্বাধীনতা থাকে না, মানুষ ভোট দিতে পারে না। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি বিষয়ে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চলছে।

খসরু বলেন, গণমাধ্যমের ওপর যে হস্তক্ষেপ হয় এটা আজকে বিশ্ব নজরে এসেছে। একটি সময় আসবে বাংলাদেশে গণমাধ্যম বলে কিছু থাকবে না। সাংবাদিকদের কোনো ভূমিকা থাকবে না। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।

জেটেব সভাপতি মো. ফখরুল আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!