খুলনা, বাংলাদেশ | ১৬ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  একদিনে রেকর্ড ৪২৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি
  আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
  খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কের হোগলাডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই জন নিহত

আসামি হাজির না করেই জামিন আবেদন, আদালত থেকে পালালেন আ.লীগ নেতা

গেজেট ডেস্ক

ঝিনাইদহে আসামিকে আদালতে হাজির না করেই আত্মসমর্পণ ও জামিন আবেদনের ঘটনা ঘটেছে। পরে অবস্থা বেগতিক দেখে আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেছেন মামলার এক নম্বর আসামি। রোববার (২৯ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ ঘটনা ঘটে।

পলাতক অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম নজরুল ইসলাম খান। তিনি কালীগঞ্জের নাটোপাড়া গ্রামের হাসেম আলী খানের ছেলে। এ ছাড়া তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য।

জানা যায়, সম্প্রতি নাটোপাড়া গ্রামে শাহিনুর রহমান শাহিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম খানকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মোট আসামি ২৫ জন। রোববার ওই মামলার ২৫ জন আসামি আত্মসমর্পণ ও জামিন নেওয়ার জন্য আদালতে যান। আসামিপক্ষের আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী ২৫ জন আসামির আত্মসমর্পণ ও জামিনের জন্য ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন। পরে
এ সময় আদালত আইনজীবীকে এক ঘণ্টার ভেতরে অনুপস্থিত আসামি নজরুল ইসলাম খানকে হাজির করতে বলেন। এই খবর শুনে আদালত চত্বরে থাকা নজরুল ইসলাম খান পালিয়ে যান। পরে আদালত উপস্থিত ২৪ জন আসামির মধ্যে ছোট তালিয়ান গ্রামের পাঁচ আসামিন জামিন মঞ্জুর করেন এবং ১৯ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে আসামিকে আদালতে হাজির না করেই আত্মসমর্পণ করানো ও জামিন প্রার্থনার ঘটনাটি আদালত চত্বরে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় নানা আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা জানিয়েছেন, আসামি হাজির না করে ওকালতনামায় স্বাক্ষর করা ও জামিন প্রার্থনা করার বিষয়টি লজ্জাজনক। এ ধরনের ঘটনায় আইনজীবীদের সতর্ক ও দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি।

এ ঘটনায় আসামিপক্ষের আইনজীবী শারমিন সুলতানা শ্যামলী বলেন, ২৫ জন আসামিকে আত্মসমর্পণ ও জামিন প্রার্থনার আবেদন করা হয়। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম অন্য একটি মামলায় জজ কোর্টে হাজিরা দিতে যান। ঠিক ওই সময় আদালতে জামিন শুনানি শুরু হলে নজরুল ইসলাম খানকে অনুপস্থিত পান আদালত। পরে তাকে হাজির করার জন্য এক ঘণ্টা সময় দেন আদালত। কিন্তু এই খবর জানার পর আসামি নজরুল ইসলাম খান আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে যান। পরে আর তাকে হাজির করা যায়নি। বাকি ২৪ জন আসামিকে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খলিল মিয়া বলেন, এই মামলায় ২৫ জন আসামিকে আত্মসমর্পণ দেখিয়ে আদালতে জামিন চান আসামিপক্ষের আইনজীবী। কিন্তু আসামিদের মধ্যে আদালতে হাজির ছিলেন ২৪ জন। এক নম্বর আসামি নজরুল ইসলাম খান আদালতে গরহাজির ছিলেন। প্রধান আসামিকে আদালতে হাজির না করেই কৌশলে জামিন চেষ্টার বিষয়টি নজিরবিহীন। এ ঘটনায় তদন্ত হলে সত্যটা বেরিয়ে আসবে।

ঝিনাইদহ জেলা আদালতের কোর্ট পরিদর্শক মো. মুক্তার হোসেন বলেন, সংশ্লিষ্ট মামলায় ১৯ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আত্মসমর্পণ ও জামিন প্রার্থনার আবেদন থাকলেও এই মামলার ১নং আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। সময় দিলেও তাকে আর আদালতে হাজির করেননি আসামিপক্ষের আইনজীবী। পরে ২৪ জনের মধ্যে ৫ জনকে জামিন দেন আদালত।

খুলনা গেজেট/এএজে




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!