ঘড়ির কাটা তখন রাত ৯ টা ছুঁই ছুঁই। এ সময় আলামিনসহ আরও দু’যুবক স্থানীয় লোহারগেট সংলগ্ন জনৈক মামুনের গ্যারেজে প্রবেশ করে। এর কিছুক্ষণ পর ওই গ্যারেজে অস্ত্রসহ প্রবেশ করে কয়েকজন কিশোর। তারা ১০ মিনিট পর সেখান থেকে উচ্চস্বরে গালিগালাজ করতে করতে বানিয়াখামার রাস্তার শেষ সীমানার দিকে চলে যায়। এরপর চাউর ওঠে কিশোরগ্যাং আলামিনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
এ ঘটনায় আলামিনের পিতা ১৯ জন আসমির নাম উল্লেখ করে খুলনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ রাতে ঘটনাস্থল থেকে মামলার এজাহারনামীয় ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। দুপুরে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকা থমথমে রয়েছে। ঘটনার পর থেকে কেউ এ বিষয়ে কোন কথা বলছেন না।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বানিয়াখামার এলাকায় দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি আলামিন গ্রুপ, অন্যটি দাদো মিজান গ্রুপ। গত দুইমাস আগে আলামিন গ্রেপ্তার হওয়ার আগে দাদো মিজান গ্রুপের প্রধানের সাথে আলামিনের মনোমালিন্য হয়। এ ঘটনায় আলামিন দাদো মিজানকে হত্যা করার জন্য গুলি করে। কিন্তু সে গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় ওই যাত্রায় দাদো মিজান প্রাণে বেঁচে যান। বিষয়টি মিজান এড়িয়ে গেলেও কাউন্টার ঘটনাটি ঘটে যায় গতরাতে।
অপর একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় মাদক বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। এর পেছনে একজন প্রভাবশালীর হাত রয়েছে বলে ওই সূত্রটি দাবি করে।
খুলনা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. কামাল খান বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আলামিনকে হত্যা করার জন্য দু’টি দলে মোট ২০ জন ছিল। প্রথমটি ব্যর্থ হলে পরের দল তাকে আক্রমণ করে হত্যা করবে।
তিনি বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য এ হত্যাকাণ্ড। রাত ৯টার দিকে দু’জন ব্যক্তি তাকে ডেকে ওই মামুনের গ্যারেজের ভেতর নিয়ে আসে। আলামিন কিছু বুঝে ওঠার আগেই সন্ত্রাসীরা তার ওপর আক্রমণ করে। এখানেই ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পরই ওই দু’ব্যক্তি আবার আলামিনকে চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে গ্যারেজ মালিক মামুন, ইব্রাহিম ও ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে খুলনা থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছন। মামলার তদন্ত চলছে, অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএজে