বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করায় শাস্তিপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশিকে ক্ষমা করেছে দেশটির সরকার। ক্ষমাপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জন শনিবার রাতে দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুইজন ও চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১২ জন অবতরণ করেন।
শনিবার রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেছেন, ইকে ৫৮৬ ফ্লাইটে ১৪ জন ফিরেছেন। দুইজন ঢাকায় ফেরার তথ্য পেয়েছি।
তবে বিমানবন্দরের উপসহকারী ব্যবস্থাপক আবদুল হান্নান জানিয়েছেন, প্রথম ফ্লাইটে সিলেটের সোহায়েল আহমেদ নামের এক যাত্রী ঢাকায় ফিরেছেন। পরে ফিরেছেন জাহিদ নামের আরেক যাত্রী।
১৪ জনকে অভ্যর্থনা জানাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলমসহ অনেকে। সেখানে ফিরে আসাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
শেখ হাসিনা শাসনমালে ১৮ জুলাই থেকে চালানো হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে দুবাই, শারজাহ, আজমানের বিভিন্ন এলাকার সড়কে বিক্ষোভ করেছিলেন হাজার বাংলাদেশি। রাজতন্ত্রের দেশটিতে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গ করায় পরের দিন বিক্ষোভ থেকে আটক তিনজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ১১ বছর এবং বাকি ৫৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন স্থানীয় আদালত।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই রায়কে মানবাধিকার লঙ্ঘন বললেও হাসিনা সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছিল, দণ্ডিতদের মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। সেই সময়কার প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেছিলেন, ‘যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-বিএনপির প্রেতাত্মারা যেমন কৃতকর্মের শাস্তি পেয়েছে, তেমনি দুবাইয়ে আন্দোলন করে তারা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। এজন্য তাদের শাস্তি হয়েছে।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালান। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ প্রথম সভাতেই দণ্ডিত বাংলাদেশিদের মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। আইনজীবী নিয়োগ করে আপিল প্রক্রিয়া শুরু করে। ড. ইউনূস কথা বলেন আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। বাংলাদেশের অনুরোধে ৫৭ বন্দিকে ক্ষমা করে আমিরাত।