খুলনা, বাংলাদেশ | ১২ পৌষ, ১৪৩১ | ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জাহাজে ৭ খুনে জড়িতদের বিচার দাবিতে সারাদেশে নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতি শুরু
  মারা গেছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং

আমার সাংবাদিক হওয়ার গল্প

শেখ দিদারুল আলম

ছোট্টকাল থেকে ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা খুব পছন্দ করতাম। সময় ও সুযোগ পেলে খেলা দেখার জন্য এদিক ওদিক চলে যেতাম।

১৯৭৫ সালের দিকের ঘটনা। আমাদের বাসা তখন বায়তিপাড়ায়। আমি প্রতিদিন বিকেলে খুলনা ঝঃধফরঁস এ খেলা দেখতে যাই। কিন্তু মাঠে প্রবেশ করি ঐধষভ ঃরসব এর সময়। কারণ টিকিট কেটে খেলা দেখার সামর্থ্য আমার ছিল না। আর ঐধষভ ঃরসব এর পর ঝঃধফরঁস সব গেট খুলে দেয়া হয়। বিনা টিকিটে ঢোকা যায়। এই সুযোগটি গ্রহণ করি। একদিন খেলার সাথে জড়িত একজনের কাছে জানলাম প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা ভিআইপি গ্যালারীতে বসে খেলা দেখার সুযোগ পায়। টিকিট দরকার হয় না। প্রবন্ধ লেখার অভ্যাস ছিল। তাই মনে মনে ভাবলাম যদি সাংবাদিক হওয়া যায় তাবে খেলা দেখার সুযোগও হবে এবং পত্রিকায় নিউজও করা যাবে। ঐ সময় বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক মনিরুজ্জামান ডন ভাই একটি লোকাল দৈনিকে খেলার নিউজ দিতেন। আমি প্রতিদিন সকালে শান্তিধাম মোড়ে এসে মরহুম খালেক চাচার (খুলনার প্রবীণ হকার নেতা) পেপার হাউজে এসে খেলার খবর পড়তাম। একদিন সাংবাদিক হওয়ার আশা নিয়ে শামসুর রহমান রোডে অবস্থিত দৈনিক জন্মভূমি অফিসে হাজির হলাম। বার্তা সম্পাদক আসাদ ভাইয়ের কাছে ইচ্ছেটা জানালাম। তিনি সব শুনে বললেন আগে খেলার নিউজ দেও। তারপর দেখা যাবে কি করা যায়।

খেলার নিউজ দিতে শুরু করলাম। কিন্তু মাঠে ঢুকতে পারি না। কারণ আমার কাছে সাংবাদিকতার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। ঠিক এই দৈনিক জন্মভূমির হিসাববিভাগের কর্মরত অরুন মন্ডল আমাকে একদিনের মধ্যে সম্পাদক মরহুম হুমায়ুন কবির বালু ভাইয়ের মাধ্যমে আইডি কার্ড করে দিলেন। এটি আমার জীবনের প্রথম সাংবাদিকতার কার্ড। যেটির মূল্য আমার কাছে অনেক দামি। এবার আমি ভিআইপি গেট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করি। খেলা দেখি। খেলোয়াড় ক্রীড়া সংগঠকদের সাথে পরিচয় বাড়তে লাগলো।

কিন্তু আব্বা বিষয়টিকে ভালো ভাবে নেননি। যদি সাংবাদিকতা করতে যেয়ে আমার লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটে । তবে আল্লাহর রহমতে বিঘœ ঘটে নাই। বরং যথা সময়ে অনার্স সহ এমএ এবং এলএলবি শেষ করেছি এবং বার কাউন্সিল থেকে বারের সদস্য পদও লাভ করেছি। ছাত্র হিসেবে কেমন ছিলাম জানি না, তবে লেখাপড়ার জীবনে সরকারি বৃত্তিও পেয়েছি। তবে সাংবাদিকতা করার কারণে একটা সমস্যাও হয়েছে। যেমন উকালতিতে মন টিকে নাই, তেমনি সরকারি সিও রেভিনিউ সহ প্রথম শ্রেনীর তিনটি চাকরি ছেড়েছি। ঐ সময় আমার সাথে খুলনায় শুরু করা তিন সাংবাদিক বন্ধু যথা সময়ে তাদের লেখা পড়া শেষ করতে পারে নাই। এখানে একটা কথা বলা দরকার আমার লেখাপড়ার জীবনে আমার সেজ নানা মরহুম শেখ আবদুল বারীর অবদান অনেক অনেক বেশি।

যাই হোক, জন্মভূমিতে এক বছর কাজ করার পর ২০০ শত টাকা বেতনে দৈনিক জনবার্তায় ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে যোগদান করি। এই সময় আমি ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে খুলনা জেলা ফুটবল দলের সঙ্গে দেশের বৃহত্তর সব জেলায় ভ্রমণ করেছি।

আশির দশকের প্রথম দিকে আমি দৈনিক কিষান ও দৈনিক শক্তিতে কাজ করি। এরপর মরহুম আশরাফ উদদীন মকবুল ভাই খুলনা থেকে ঢাকায় বদলী হলে আমি মরহুম আবু সাদেক ভাইয়ের সহযোগিতায় বাসস-এ যোগদান করি। এরপর ১৯৮৪ সালে আমি ইন্টারভিউ দিয়ে বিটিভিতে যোগদান করি। পরবর্তীতে আমি বাসস থেকে চলে এসে ইউএনবি’তে যোগদান করি। (ফেসবুক ওয়াল থেকে)




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!