খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৮ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৮৯
  পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকেও আমরা ভারত থেকে ফেরত চাইব : প্রধান উপদেষ্টা
ভোমরা স্থলবন্দর

আমদানি কম হলেও গত অর্থবছরের রাজস্ব আদায় বেড়েছে ২৭৫.৮৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল স্থল বন্দরের পরেই সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের অবস্থান। দিনে গড়ে ২শ’ থেকে ২৫০টি ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয় এই স্থলবন্দর দিয়ে। অন্যদিকে প্রতিদিন গড় ৫০ থেকে একশত পণ্যবাহী ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি হয়ে থাকে। সদ্য বিদায়ী ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে পণ্য আমদানি অপেক্ষাকৃত কম হলেও বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে তুলনায় বেড়েছে রাজাস্ব আদায়।

ভোমরা শুল্ক স্টেশন হতে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ভোমরা স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনে বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের তুলনায় গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯৩ মেট্রিক টন পণ্য কম আমদানি হয়েছিল। কিন্তু তারপরও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পায় ২৭৫.৮৬ কোটি টাকা। এসময় ওই অর্থ বছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৯০৭.৫৮ কোটি টাকা। যা বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ছিলো ৬৩১.৭২ কোটি টাকা।

ভোমরা শুল্ক স্টেশন হতে প্রাপ্ত তথ্য থেকে আরও জানা যায়, ২০২২-২০২৩ গত অর্থ বছরে রপ্তানিকৃত পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা ছিল ২১হাজার ৬২৭টি এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে রপ্তানিকৃত পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা ছিল মোট ২৪ হাজার ৫৮০টি। যা বিগত অর্থ বছরের তুলনা গত অর্থ বছরে রপ্তানিকৃত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১৩.৬৫%। এছাড়া গত অর্থ বছরে আমদানিকৃত পণ্যবাহী গাড়ি এসেছিল ৬৩ হাজার ৯০২টি, যা বিগত ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ছিল ৮২ হাজার ২২৮টি। বিগত অর্থ বছরের তুলনায় গত অর্থ বছরের পণ্যবাহী গাড়ির সংখ্যা কম এসেছে ১৮ হাজার ৩২৬টি। অপর দিকে বিগত অর্থ বছরে আমদানিকৃত পণ্যের পরিমান ছিল ৩০ লাখ ৯হাজার ৯৫৫ মে. টন এবং গত ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণ ২৩ লাখ৫৫ হাজার ৬২ মে. টন। ফলে বিগত অর্থ বছরের তুলনায় গত অর্থ বছরে আমদানিকৃত পণ্য কম হয়েছে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৮৯৩ মেট্রিক টন।

এছাড়া প্রতিদিন ৮শত থেকে এক হাজার জন পার্সপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশ থেকে ভারত ও ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা যাওয়া করেন। এই বন্দর দিয়ে ৭৮টি পণ্য আমদানির অনুমতি আছে। শুরু থেকেই এই বন্দরে আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা ও বাঁধা বিপত্তি থাকলেও বর্তমানে বন্দরটির কার্যক্রমে গতিশীলতা ফিরে এসেছে।

ব্যবসায়ীরা দাবী জানিয়ে বলেন, পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরে যে সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় ভোমরা স্থলবন্দরে সেই সুযোগ-সুবিধা পায়না ব্যবসায়িরা। ফলে অনেক ব্যবসায়ি এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। পণ্য খালাসে হয়রানি বন্ধসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা পেলে দেশের বয়বসায়িরা ভোমরা স্থলবন্দরমুখী হবে। ফলে দেশের রাজস্ব আয় বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ভারতের কোলকাতা থেকে সব চেয়ে কাছের এই স্থলবন্দরটি।

ভোমরা স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এএসএম মাকসুদ খান বলেন, ভৌগলিক দিক থেকে কোলকাতা থেকে আমাদের বন্দরটি সব থেকে কাছে হওয়ায় আমদানি-রপ্তানিতে ভোমরা বন্দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এজন্য এখানে একটি কাস্টমস্ হাউজ অত্যন্ত জরুরী। এছাড়া এই বন্দর দিয়ে সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। কাস্টমস্ হাউজ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সব ধরনের পণ্য আমদানির সুযোগ সৃষ্টি হলে যে কোন সময়ের তুলনায় এই বন্দরে রাজস্ব আদায় কয়েক গুন বেড়েে যাবে।

এলসি স্টেশন ভোমরার সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন) মুশফেকুর রহমান জোসেফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করার কারণে বিগত অর্থ বছরের তুলনায় চলতি অর্থ বছরে ২৭৫.৮৬ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় বেশি হয়েছে। সকলের সহযোগিতায় সরকারের রাজস্ব আদায় গত অর্থ বছরের তুলনায় চলতি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে আরো বেশি হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

ভোমরা স্থলবন্দরের সহকারি উপ পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমিন জানান, ভোমরা বনদরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকার ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এসবের মধ্যে কিছুটা বাস্তবায়িত হয়েছে এবং কিছুটা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। এ বন্দরটিতে দ্রুত কাস্টম হাউজ চালু করা হবে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসাবে সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ভোমরা স্থল বন্দর পরিদর্শন করেছেন। বন্দরের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশপাশি সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে এই বন্দর দিয়ে রেকড পরিমান রাজাস্ব আদায় সম্ভব হবে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!