আফগানিস্তানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করেছে তালেবান। গত মঙ্গলবার ঘোষণা করা নতুন এই সরকারে কোনো নারী না থাকলেও স্থান পেয়েছেন কট্টরপন্থিরাই। আর তাই নতুন আফগান সরকারে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশার প্রতিফলন হয়নি বলে মন্তব্য করেছে বাইডেন প্রশাসন। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, ‘আফগানিস্তানে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। আমরা বলেছি- এই সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক নয়। এছাড়া সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনের অতীতের কর্মকাণ্ডও উদ্বেগের বিষয়। আর তাই, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও যুক্তরাষ্ট্র যেটা আশা করেছিল; কাবুলে গঠন করা নতুন সরকারে তা পূরণ করা হয়নি।’
আফগানিস্তানে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। কোনো নারীর স্থান না হওয়া নতুন এই সরকারে এমন সব জ্যেষ্ঠ ও কট্টরপন্থি তালেবান নেতাদেরকে স্থান দেওয়া হয়েছে, যারা গত দুই দশক ধরে দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ওপর জঘন্য সব হামলা পরিচালনার জন্য অভিযুক্ত।
মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ জাতিসংঘের কালো তালিকায় রয়েছেন। ১৯৯৬-২০০১ সালে তালেবানের প্রথম দফার সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ওই সময়ে তালেবান সরকারে দায়িত্ব পালন করার কারণেই তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসংঘ।
এছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া সিরাজউদ্দিন হাক্কানির মাথার মূল্য বহু আগেই ৫০ লাখ ডলার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
নেড প্রাইস বলছেন, ‘সরকার গঠন করা হলেও এটি একটি প্রাথমিক ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এছাড়া সরকারের অনেক পদ এখনও পূরণ করা হয়নি। ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গভাবে সরকার গঠন করা হলে সেটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রতিনিধিত্বমূলক হওয়াটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যারা মূলত আফগান নাগরিকদের প্রতিনিধিত্ব করবে।’
উল্লেখ্য, আফগানিস্তানের নতুন সরকারপ্রধান মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ তালেবানের আগের সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। তিনি দুই দশক ধরে তালেবানের প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত-গ্রহণকারী পরিষদ ‘রেহবারি শুরা’ বা নীতি-নির্ধারণী পরিষদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়া তালেবানের এই সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন ক্বারী দ্বীন হানিফ। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হয়েছেন আমির খান মুত্তাকি। রাষ্ট্রপ্রধান ও তার দুই সহকারীর পর গুরুত্বপূর্ণ দুই মন্ত্রণালয় হচ্ছে স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা। তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমরের ছেলে মোল্লা ইয়াকুব প্রতিরক্ষা এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে।