আফগানিস্তানে নর্দান অ্যালায়েন্সের শেষদুর্গ পাঞ্জশির দখল করেছে তালেবান। পাঞ্জশির প্রদেশের নিয়ন্ত্রণকারী জাতীয় প্রতিরোধ ফ্রন্টের কমান্ডার আহমেদ মাসুদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে দাবি করেছে তালেবান। তিনি আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে তুরস্কে চলে গেছেন বলে দাবি করেছেন তালেবানের নিউজ চ্যানেল আলেমারাহর সাংবাদিক তারিক গজনিওয়াল।
সোমবার ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পাঞ্জশিরে ইন্টারনেট সেবা নেই। তাহলে আহমেদ মাসুদ অনলাইনে পোস্ট করছেন কীভাবে? তিনি তুরস্কে আছেন।
এর আগে পাঞ্জশির দখলের পর প্রতিরোধ বাহিনীর অন্যতম নেতা, আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে দাবি করেছিল তালেবান।
তালেবানের তরফ থেকে জানা গেছে, দেশ ছেড়ে তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন সালেহ। তবে এ ব্যাপারে আমরুল্লাহ সালেহর কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, স্থানীয় সময় রোববার রাতেই পাঞ্জশিরে সংঘর্ষ থামানোর বার্তা দেন মাসুদ আহমেদ।
সোমবার সকালেই গোটা পাঞ্জশির দখল করে নেওয়ার দাবি জানায় তালেবান। এরপরই আমরুল্লাহ সালেহ ও আহমেদ মাসুদের দেশ ছাড়ার খবর সামনে এলো। এর আগেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে সালেহের দেশ ছাড়ার খবর পাওয়া গিয়েছিল। পরে অবশ্য তা গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং সালেহ।
গত কয়েক দিন ধরে তালেবান ঘোষণা করে আসছিল, পাঞ্জশিরের কমান্ডারদের সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে ওই উপত্যকা দখল করা হবে।
গত পাঁচ দিন ধরে তালেবানের পক্ষ থেকে পাঞ্জশির উপত্যকা দখলের অভিযান চলছে। রোববার বিকালে তালেবান দাবি করেছে, তারা ওই উপত্যকার প্রায় পুরো অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে।
২০০১ সালে দুই আল কায়েদা সদস্যের আত্মঘাতী হামলায় পাঞ্জশিরের সিংহ হিসেবে পরিচিত আহমেদ শাহ মাসুদ যখন নিহত হন, তখন তার ছেলে আহমাদ মাসুদ ছিলেন ১২ বছর বয়সী কিশোর।
রুশ বাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন মুজাহিদ নেতা আহমেদ শাহ মাসুদ এবং তিনি পাঞ্জশিরে রুশ বাহিনীর আধিপত্য মেনে নেননি।
তার ছেলে আহমেদ মাসুদ ঘোষণা করেছেন, তিনি বেঁচে থাকতে ওই উপত্যকায় তালেবানের আধিপত্য মেনে নেবেন না।
সোমবার সকালে তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাহিবুল্লাহ মুজাহিদ বলেন, আফগানিস্তানের শেষ প্রদেশ হিসেবে পাঞ্জশির এখন আমাদের দখলে। গোটা আফগানিস্তানের দখল নিয়েছে তালেবান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে— মাসুদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তালিবযোদ্ধারা।
খুলনা গেজেট/কেএম