খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ময়মনসিংহে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে একই পরিবারের ৪ জন নিহত
  নিখোঁজের ৪২ ঘণ্টা পর কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী নদী থেকে দুই পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার
  ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক আটক
  সচিবালয়ের আগুন সোয়া ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিস

আধিপত্য কায়েম করতে সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলছে ভারত : রিজভী

গেজেট ডেস্ক

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের উসকে দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চাচ্ছে উপমহাদেশে তাদের আধিপত্য কায়েম করতে।”

ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে আপনারা ভারতকে যেমন বিভাজন করছেন ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে গণতন্ত্রের যে একটি ঐতিহ্য ছিল এটাকেও ভূলুণ্ঠিত করেছেন আর সেই সাম্প্রদায়িকতার ধোঁয়া তুলে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের উসকে দিয়ে আপনারা চাচ্ছেন উপমহাদেশে আপনাদের আধিপত্য কায়েম করতে। আপনাদের এই বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব, হিংসামূলক মনোভাবের কারণে, আপনাদের এই ধরনের অপরকে ঘৃণা করার মনোভাবের কারণে আজকে নেপাল আপনাদের সঙ্গে নেই, ভুটান আপনাদের সঙ্গে নেই, শ্রীলংকা আপনাদের সঙ্গে নেই, মালদ্বীপ আপনাদের সঙ্গে নেই, পাকিস্তান তো নেই, বাংলাদেশও আপনাদের সঙ্গে নেই। শুধুমাত্র আপনাদের অহংকার এবং একের পর এক শোষণের যে মনোভাব সেই কারণে।”

শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিতে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, “আমরা একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ জাতি। এই জাতি স্বাধীনতা অর্জন করেছে ৩০ লাখ মানুষের আত্মদানের মধ্য দিয়ে ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমহানির মধ্য দিয়ে। ১৮-১৯ কোটি মানুষের এই দেশকে আপনারা চোখ রাঙিয়ে ভয় দেখিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার দিয়ে দাবিয়ে রাখতে পারবেন? হঠাৎ করে আপনাদের কী হলো যে আপনারা উঠেপড়ে লেগেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করতে।”

তিনি আরও বলেন, “৫ আগস্টের আগে এ দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল ঘৃণিত একটি সরকার। এরা ক্ষমতায় থাকার জন্য নিজ দেশের সন্তানদেরকে হত্যা করতে দ্বিধা করতো না। এরা নিজ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষদেরকে চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ করতে দ্বিধা করতো না। এরা ক্রসফায়ার দিয়ে নদীর ধারে খালের ধারে মানুষদেরকে নির্দ্বিধায় হত্যা করতো। সেই হাসিনা সরকার আপনাদের এত প্রিয় ছিল কেন? আপনাদের সাহসে আপনাদের উসকানিতে শেখ হাসিনা যা ইচ্ছা তাই করে গেছে এই দেশে। তার ভোটের দরকার হতো না, শেখ হাসিনার অধীনে যে ভোটগুলো হয়েছে সেই ভোটগুলো হয়েছে ভোটারবিহীন। যে ভোটের এক একটা নাম আছে, ‘ভোটার শূন্য ভোট’, ‘মিডনাইট ভোট’ আরও অনেক কিছু।”

ভারতের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “আপনারা মনে করছেন পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষ তরকারিতে পেঁয়াজ ব্যবহার করতে পারবে না। আপনারা রসুন, আদা সয়াবিন তেল বন্ধ করে দিলে আমরা এগুলো আর রান্নায় ব্যবহার করতে পারব না- এটা তো আপনারা দুঃস্বপ্ন দেখছেন। আপনারা গরু রপ্তানি পাঁচ ছয় বছর ধরে বন্ধ করে দিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষ গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গরুর খামার, ছাগলের খামার গড়ে তুলে এক কোরবানি ঈদেই এক কোটি ২০ লাখ গবাদি পশু জবাই হয়।”

রুহুল কবির রিজভী ভারতের উদ্দেশে আরও বলেন, “আপনারা ভুলে যাবেন না বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত শ্রমপ্রিয়, কষ্টপ্রিয়, পেঁয়াজ রসুন আদা তারা নিজেরাই উৎপাদন করতে জানে। আপনারা মনে করেন আপনারাই শুধু একটি দেশ আছে পৃথিবীতে। আর কী দেশ নেই পৃথিবীতে যাদের কাছ থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করতে পারব যাদের কাছ থেকে আমরা রসুন তেল আমদানি করতে পারবে? সেইসব দেশ কি নেই? আপনারা মনে করেছেন এগুলো বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থা কাহিল হবে। অবস্থা কাহিল হয়েছে আপনাদের। আপনাদের নিউমার্কেটের কোনো দোকান চলে না, আপনাদের মার্কেটগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বাংলাদেশের মানুষ ওই কলকাতায় গিয়ে ডলার খরচ করে তারা সেখানে কেনাকাটা করে চিকিৎসা করতে যায় হাসপাতালে। হাসপাতাল আর চলবে না। আপনারা বন্ধ করে দিয়ে মনে করেছেন বাংলাদেশের মানুষ অস্থির হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষ আনন্দিত। প্রয়োজন হলে থাইল্যান্ড যাবে মালয়েশিয়া যাবে ইন্দোনেশিয়া যাবে কিংবা অন্য দেশে যাবে। আপনাদের মতো হিংসা দ্রোহী যারা ঘৃণা পোষণ করে সেই দেশে মানুষ যেতে চায় না। কারণ রক্তমূল্যে স্বাধীনতা কেনা এই জাতি। এই জাতিকে ভয় দেখিয়ে আপনাদের নতজানু করবেন, সেই জাতি বাংলাদেশ নয়।”

তিনি বলেন, “রিপাবলিক বাংলা বলেছে চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ হিসেবে দাবি করা হয়েছে আরো কত মিথ্যা অপপ্রচার চলছে। আমরা বলছি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশে আপনারা দাবি করলে আমি আগেও বলেছি আমরাও আমাদের নবাবের এলাকা ওই বাংলা বিহার উড়িষ্যা আমরা দাবি করব। এটা তো আমাদের ন্যায্য পাওনা। এই কথাগুলো আমরা বলতে চাই না। অনেক সংগ্রাম আন্দোলন, ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রাম এই উপমহাদেশে আমরা একসঙ্গে করেছি।”

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ-সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি জাহিদুল কবির, ছাত্রদল নেতা তৌহিদ আওয়াল, রাজু আহমেদ প্রমুখ।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!