খুলনা, বাংলাদেশ | ৩০ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ফ্যাসিবাদের শেকড় অনেক দূর ছড়িয়ে গেছে : আইন উপদেষ্টা
  রাজধানীর হাজারীবাগে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে আহত কিশোরের মৃত্যু

আধা ঘন্টার গরম বাতাসে শত শত হেক্টর জ‌মির ধান নষ্ট !

সলিল বিশ্বাস মিঠু, গোপালগঞ্জ

চারিদিকে ফসলের বিস্তীর্ন মাঠ, সবুজ ক্ষেতে কৃষকের ঘাম ঝরানো হলুদের ছটায় যখন ধানের ছোট ছোট দানা বাধতে শুরু করেছে ঠিক সেই মুহুর্তে রোববার রাতে জেলার উপর দিয়ে বয়ে যায় ঝড়ো বাতাস। আর এতে ক্ষেতে উঠতি বোরো ধান যে গুলোতে ধানের শীষে ‘দুধ’ এসছে সেই ধান সব চিটায় পরিনত হয়ে সাদা বর্ন ধারণ করেছে।

এক রাতের মধ্যে জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া এবং কাশিয়ানীতে শত শত হেক্টর জমির ধান সবুজ থেকে সাদা হয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে ইরি-বোরো ধানের শীষ।কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন লু হাওয়ার কারনে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। জেলার অন্ততঃ ১০টি ইউনিয়নে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আর এতে জেলার শত শত কৃষকেরা কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন।

রোববার দিবাগত রাতে জেলার ৪টি উপজেলার ‍অন্তত ১০ টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে গরমহাওয়া বয়ে যায়। মাত্র আধা ঘন্টা ধরে চলা এ গরম হাওয়ায় কোটালীপাড়া উপজেলার কান্দি,পিঞ্জুরী,হিরন ও আমতলী ইউনিয়ন,টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর,ডুমুরিয়া,পাটগাতি ও বর্নি ইউনিয়ন,কাশিয়ানীর রাতইল ইউনিয়ন,সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের শত শত হেক্টর জমির বোরো ধান নষ্ট হয়ে গেছে বলে কৃষি অফিস সুত্রে জানগেছে। সারা বছর কি খেয়ে ‍দিন কাটাবেন এখন সেই চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলার অপর্না রানী খান বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ। অমার ছোট ছোট বাচ্চা আছে। আমি ধার দেনা করে নিজে তিন বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। আমার সেই তিন বিঘা জমির সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া আমার আর কোন আয় রোজগার নেই। এই ধান না পেলে আমি স্বামী-সন্তান নিয়ে কিভাবে বাঁচব।

একই গ্রামের বিষ্ণুপদ সেন বলেন,ধার-দেনা করে পাঁচ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি।এখন জমি থেকে একটি ধানও বাড়িতে নিতে পারব না। ভেবেছিলাম ধান ঘরে তুলে বিক্রি করে ধার-দেনা শোধ করব। এখন দেনা দেওয়া তো দুরের কথা, নিজেরা কি খেয়ে বাচব তাই চিন্তা করছি।

কোটালীপাড়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের অমল হালদার বলেন,গত রোববার রাতে অত্যাধিক গরম হাওয়া বয়ে যায়। সকালে জমিতে গিয়ে দেখি জমির সব ধানের শীষ ঝলসে গেছে। পুরো ক্ষেতের ধান সাদা হয়ে গেছে। এখন আমরা কি করব বুঝে পারছি না।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, এ বছর জেলায় ৭৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। গরম বাতাসে জেলার টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও সদর উপজেলার বোরো ধানের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান নিরুপনে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছেন। বিষয়টি ধান গবেষণা ইনিষ্টিটিউটকে জানানো হয়েছে। তারা পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নিবেন।

খুলনা গেজেট/ টি আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!