খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে
শিক্ষকের প্রহারে ছাত্রের মৃত্যু

আদালতে  চারছাত্রের জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন খারিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের প্রহারে নবম শ্রেণির ছাত্র রাজপ্রতাপ দাসের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার  সাক্ষী নবম শ্রেণির চার ছাত্রের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেনি আদালত। বুধবার (১৯ জুলাই)  সাতক্ষীরার  জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাকিবুল ইসলাম সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন  খারিজ করে দেন।
আদালতে জবানবন্দি দিতে আসা সাক্ষীরা হলো, নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র জুবায়ের আহম্মেদ (১৬), মুশফিকুর রহমান (১৬), ইউসুফ হোসেন (১৬) ও আর রাফি (১৬)।
এদিকে গত ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় কালিগঞ্জের নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তিন তলার ছাদে জুবায়ের ও তার এক সহপাঠীর জন্মদিনের কেক কাটা অনুষ্ঠানে নলতা বালিকা বিদ্যালয় থেকে কয়েক ছাত্রীকে নিয়ে এসে টিকটক করার আপত্তি না শোনায় শিক্ষকের হাতে প্রহৃত হয় জুবায়ের, মুশফিকুর, আর রাফি, ই্উসুফ ও রাজপ্রতাপ।  পরে ওই দিন দুপুর একটা ৪০ মিনিটে রাজপ্রতাপ মারা যায়। এ ঘটনার পর জুবায়ের বুধবার ১০টা ৪৬ মিনিটে ও মুশফিকুর  মঙ্গলবার  সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল কবীর।
অপর দিকে রাজপ্রতাপ দাশ হত্যা মামলায় সাক্ষী নলতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির চারজন ছাত্র বুধবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে আসে। এসময়  সাক্ষীদের বয়স কম, তাদের বিদেশে  পালিয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই এমন কথা বলে তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন রহমান ১৬৪ ধারায় সাক্ষীদের জবানবন্দি গ্রহণের আবেদন করেন। কিন্ত  বিচারক রাকিবুল ইসলাম তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন খারিজ করে দেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক অমল কুমার রায়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর জন্মদিনে কেক কেটে স্কুলের ছাদে টিকটক করার বিষয়টি জানতে পেরে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সেখানে ছুঁটে যান সহকারি শিক্ষক অবকাশ খাঁ ও মনিরুল ইসলাম। টিকটক বন্ধ করতে বলায় রাজপ্রতাপসহ নবম শ্রেণীর চার ছাত্র রাজী হয়নি। এ সময় রাজপ্রতাপসহ চার  ছাত্রকে চড় থাপ্পড় মারেন শিক্ষক অবকাশ খাঁ  ও মনিরুল ইসলাম। এরপর রাজপ্রতাপ বাড়ি এসে বমি শুরু করে। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রোববার দুপুর একটা ৪০ মিনিটে  মারা যায়। বাড়ি থেকে লাশ নিয়ে মিছিল করতে করতে শিক্ষার্থী  ও এলাকাবাসী স্কুল ঘেরাও করে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম, সহকারি শিক্ষক অবকাশ খাঁ  ও মনিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের দাবিতে তারা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। এসময়  মারপিট করা হয় শিক্ষক অবকাশ খাঁ, মনিরুল ইসলাম ও হাসানকে। পরে তারা প্রধান শিক্ষকের রুম, সহকারি প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের রুমে ভাঙচুর চালায়। নয়টি মটর সাইকেল ভেঙে ফেলে দুটিতে আগুন দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পরে প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষককে পুলিশ বেষ্টণীর মধ্য দিয়ে সদর  থানায় আনা হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। যদিও অবকাশ খাঁ ও প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম জানান যে, বিষপানে রাজপ্রতাপের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহত রাজপ্রতাপের বাবা দীনোবন্ধু দাশ বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম, সহকারি প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুহিত, সহকারি শিক্ষক মনিরুল ইসলাম, অবকাশ কুমার খাঁ ও সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে ১৭ জুলাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মনিরুল ইসলাম ছাড়া বাকি চার শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়।
খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!