২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ছিল শূন্য। ২০১৬ সালে আসন সংখ্যা ৩। ২০২১ তা বেড়ে ৭৬। অর্থাৎ বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে তার শক্তি বাড়িয়ে নিয়েছে ২৫ গুণ। আরও অন্তত ৭০ আসনে বিজেপি হেরেছে খুব অল্প মার্জিনে। মনে করার কোনও কারণ আছে কি যে, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে দুর্বল ? আমাদেরকে মনে রাখতে হবে বিজেপি আরও আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। বাম-কংগ্রেস শূন্য বিধানসভায় আজ যে রীতিমতো একটি শক্তিশালী বিরোধী দল। আগামীদিনে এই শক্তি একটা মহাশক্তিতে পরিণত হবে।
আমাদের স্মরণ করা দরকার যে, এ রাজ্যে মমতা ব্যানার্জীর তৃণমূলের হাত ধরেই বিজেপির বীজ গজিয়েছে। ১৯৯৮ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কৃষ্ণনগর ও দমদম আসনে জয়ী। ১৯৯৯ সালে এই বিজেপি কার হাত ধরে উত্তর চব্বিশ পরগনার অশোকনগর আসন ছিনিয়ে নেয়? তবে সে সময় এর বেশি আর তারা বাড়তে পারেনি।
১৯৪৬ সালে দেশ ভাগের আগে কার প্রশ্রয়ে হিন্দু মহাসভা কলকাতা দাঙ্গা সংগঠিত করেছিল? তার উত্তর অবশ্যই কংগ্রেস। ১৮৭২ সালের হিন্দু মেলা, সেখান থেকে হিন্দু মহাসভা, তারপর জনসঙ্ঘ থেকে বিজেপি। জনক কিন্ত সেই বাংলার শ্যামা প্রসাদ। সংবাদ- সাহিত্যে হিন্দুত্ববাদকে শক্তিশালী করেছে কবি ঈশ্বর গুপ্ত থেকে তার শিষ্য বঙ্কিম চন্দ্ৰ। এরাও কিন্তু সেই বাংলার সন্তান। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির আইটি সেল বা মিডিয়া সেল যেভাবে কাজ করছে তাতে তাদের সাংগঠনিক শক্তি আরো বাড়বে। সংখ্যা তত্বে বিজেপির আসন ৭৬ হলেও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট ৩৭শতাংশ। তাই পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ডুবে গেছে এ কথা ভাবার কোনো কারণ নেই। ১৯৮৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ছিল ২। ১৯৮৯-এ ৮৮। ১৯৯৯-এ বাজপেয়ীর নেতৃত্বে
ক্ষমতায়। এখন এই বিজেপি এককভাবে ও জোটবদ্ধ ভাবেই ১৭টি রাজ্যে ক্ষমতায়। পশ্চিমবঙ্গেও তারা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
খুলনা গেজেট/কেএম