খুলনা, বাংলাদেশ | ১৬ কার্তিক, ১৪৩১ | ১ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

আত্মগোপনে তেরখাদা আ’লীগের নেতাকর্মীরা

তেরখাদা প্রতিনিধি

প্রায় দেড় যুগ পর গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তেরখাদা উপজেলা বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। অথচ কিছুদিন আগেও রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশায় ভুগছিলেন তারা। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে তাদের বিপুল সংখ্যা নেতাকর্মী মামলায় অভিয়ুক্ত হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছিল। গত জুলাই মাসে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হলে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন তারা। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে চলছে বিএনপি, জামায়াত ইসলামসহ অন্যান্য দলের রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের কাছাকাছি গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করার চেষ্টা করছেন বিএনপি, জামায়াত ও অন্যান্য দলের নেতাকর্মীরা। প্রতিদিনই তারা নানান জায়গায় সভা, সমাবেশ ও বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছেন। ওই সকল কর্মসূচিতে নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছেন।

 

শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে যান। গা ঢাকা দেন কর্মীরাও। এমনকি ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতেও উপজেলার কোথাও কোন কর্মসূচি ছিল না। ১৫ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকা দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চরম হতাশার মধ্য। এদিকে ক্ষমতার পালা বদলে রাজনীতির মাঠে চাঙ্গা হয়েছে বিএনপি-জামায়াত। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, অনেক নেতা কর্মীরা গা ঢাকা দেওয়ায় এই মুহূর্তে কোন কর্মসূচি করা য়াচ্ছে না। রাজনীতির পথের কাঁটা সরাতে গত ১ আগস্ট রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার।

জামায়াত নিষিদ্ধ করার চার দিন পর ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থ্যানে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন।এরপর থেকে তেরখাদায় কোন রকমের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়াই প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্য়ক্রম চালাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে এসে রাজনৈতিক কার্য়ক্রম পরিচালনা করছেন দলটির নেতাকর্মীরা। জামায়াত ইসলাম প্রতিশোধ পরায়ন না হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক করতে চায়।

উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। এখানে সংখ্যালঘু বলতে কোন মানুষ নেই, সবাই আমরা এক দেশের মানুষ। গত ৫ আগস্ট এর পর তেরখাদায় হিন্দু ধর্মের মানুষের জানমাল ও তাদের মন্দিরের নিরাপত্তা দিতে পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দদের সাথে মতবিনিময় সহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করি। কোন হিংসা বিদ্বেষ এমনকি প্রতিশোধ পরায়ণতা কখনোই জামায়াতে ইসলামের আদর্শ নেই।

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের সঙ্গে যা করেছিল তা মোটেও যুক্তিযুক্ত ছিল না। শেখ হাসিনা সরকার দমন পীড়ন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার, পুলিশি হয়রানি সহ সব ধরনের নির্যাতন করে আমাদের কোনঠাসা করে রেখেছিল। জুলুম নির্যাতনের শিকার আমাদের নেতাকর্মীরা জামায়াত ছেড়ে যাননি।

এদিকে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরই চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে।

উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক চৌধুরী ফখরুল ইসলাম বুলু বলেন, বিএনপি গণমানুষের দল। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রেখে এবং দেশনায়ক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা করেও বিএনপিকে শেষ করা যায়নি। দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জাতীয়তাবাদীর শক্তি তথা বিএনপি’র বিকল্প নেই।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম মনিরুল হাসান বাপ্পী বলেন, ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনার নির্যাতন নিপিড়নে দেশের মানুষ বিশেষ করে বিএনপির নেতা কর্মীরা ছিলেন অতিষ্ট। এখন স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন ভাবে বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছি। গণতন্ত্রের শক্তি হলো মানবাধিকার। যা এতদিন শেখ হাসিনা কেড়ে নিয়েছিলেন। এখন দেশের মানুষ মুক্ত। একটি বাধাহীন পরিবেশে বিএনপি সাংগঠনিক ভাবে আরও শক্তিশালী হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!