আজ ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। নিরাপদ রক্ত নিশ্চিতকরণ ও স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উৎসাহ দিতেই গত ২০ বছর ধরে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে এই দিবসটি। নোবেল বিজয়ী জীববিজ্ঞানী ও চিকিৎসক কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০০ সালে প্রথম রক্তের গ্রুপ আবিষ্কার করেন। এটি চিকিত্সাশাস্ত্রের অনন্য একটি আবিষ্কার। চিকিত্সক কার্ল ল্যান্ডস্টেইনারের প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার জন্মদিন ১৪ জুনকে এ দিবস পালনের জন্যে বেছে নেয়। ডব্লিউএইচও ঘোষিত এ বছর দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে—‘দিবস উদযাপনের ২০ বছর : ধন্যবাদ হে রক্তদাতা!’। আন্তর্জাতিকভাবে এ বছর বিশ্ব রক্তদাতা দিবসের বিশ্বব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজক দেশ ইতালি। স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের উদ্বুদ্ধ করতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপিত হবে।
আমাদের দেশে দিবস পালনে সরকারি বেসরকারি নানা উদ্যোগের পাশাপাশি এবারও এগিয়ে আসছে পাঁচ লক্ষাধিক সুসংগঠিত ডোনার পুল নিয়ে গঠিত কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। জুনের শুরু থেকেই সংগঠনের পক্ষ থেকে মোবাইল ক্যাম্প, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রক্তদান কর্মসূচিসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে। দিবসটি ঘিরে তিন দিনব্যাপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠন।
রক্তদানের নানা উপকার: রক্তদানে নানা উপকার পেতে পারেন দাতা। রক্ত দিলে শারীরিকভাবে মেরুমজ্জার রেজুভিনেশান বা স্টিমুলেশান, হৃদরোগ/স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণের বেশি হ্রাস, ক্ষতিকর কোলেস্টরেল হ্রাস, বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ধীরগতি হওয়া ইত্যাদি উপকার পেতে পারেন একজন রক্তদাতা।
রক্তের কোনো বিকল্প নেই। নানা কারণে রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সাধারণত থ্যালাসেমিয়া রোগী, রক্তস্বল্পতা, প্রসূতির রক্তক্ষরণ, অগ্নিদগ্ধ রোগী, বড় অপারেশন, দুর্ঘটনায় আক্রান্ত রোগীর রক্তের প্রয়োজন পড়ে। আমাদের দেশে বছরে রক্তের চাহিদা আনুমানিক ৮-১০ লাখ ব্যাগ। দেশের জনসংখ্যার তুলনায় এ চাহিদা একেবারেই নগণ্য। তবে এখনো স্বেচ্ছা রক্তদানে ঘাটতি রয়েছে। ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমেই স্বেচ্ছা রক্তদাতা বৃদ্ধি করে এ চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিস্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সি যে কোনো ব্যক্তি প্রতি চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারেন। নিয়মিত রক্তদানে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণেরও বেশি কমে যায়। তার পরেও রক্তদানে অনাগ্রহী বেশির ভাগ মানুষ।
খুলনা গেজেট/এইচ