মায়ের অসুস্থতার কারণে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছানোয় অংশ নিতে না পারা সেই ছাত্রী আনিসা আরিফা পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেয়েছেন।
রোববার (২৯ জুন) বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষাসহ পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণের অনুমতি পেয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের এই শিক্ষার্থী। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আনিসার মা ও কলেজের অধ্যক্ষ।
গতকাল শনিবার বিকেলে আনিসার মা মুসলিমা আহমেদ সুবর্ণা বলেন, ‘আমি আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ। আমার মেয়ে আগামীকাল (আজ রোববার) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে, সেজন্য সে প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
ঘটনার বর্ণনায় তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর কী হয়েছে, তা আমি বলতে পারব না। চিকিৎসা শেষে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় বাসায় ফিরি।’ তাকে রাজধানীর মিরপুর ১৩ নম্বরে একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় বলে জানান তিনি।
এর আগে এদিন সকালে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আনিসার বাসায় কলেজের সিনিয়র শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক কামরুল ইসলামকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি খোঁজখবর নিয়ে জেনেছেন যে, আনিসার মা এখন সুস্থ আছেন। যখন শিক্ষক গিয়েছিলেন, আনিসার মা তখন ঘুমাচ্ছিলেন, তাই তাকে জাগিয়ে কথা বলা হয়নি।
পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে আনিসার অংশগ্রহণের বিষয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমরা ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। সে জানিয়েছে, (আজ) পরীক্ষায় সে যথারীতি অংশ নেবে। পরবর্তী সব পরীক্ষায়ও সে যথাসময়ে কেন্দ্রে গিয়ে অংশ নেবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বোর্ড থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল কি না—জানতে চাইলে অধ্যক্ষ জানান, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার কথা হয়েছিল। চেয়ারম্যান তাকে জানিয়েছেন, শিক্ষা উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিতে বিবেচনার নির্দেশনা দিয়েছেন।
চলমান উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আনিসার বাবা নেই। গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্রের দিন সকালে স্ট্রোক করেন তার মা। অসুস্থ মায়ের চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে দেরিতে পৌঁছান তিনি। তবে, দেরিতে পৌঁছানোর কারণে তাকে পরীক্ষায় বসতে দেননি কেন্দ্রের দায়িত্বরতরা। একদিকে মায়ের অসুস্থতা, অন্যদিকে পরীক্ষা দিতে না পারার বেদনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, কাঁদতে শুরু করেন হাউমাউ করে আনিসা। বিষয়টি গণমাধ্যমের শিরোনামে উঠে এলে এ বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া হয়।
খুলনা গেজেট/এইচ